নয়াদিল্লি: রাজধানীতে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালীন কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিল নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই বাড়ছিল উদ্বেগ। কেন্দ্র সরকারের কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে গত কয়েক মাস ধরে যে অনমনীয় কৃষক আন্দোলনের সাক্ষী থেকেছে দিল্লি, এদিন সম্ভবত তারই চরম আকার দেখা গেল রাজপথে। সমস্ত প্রশাসনিক প্রতিরোধ গুড়িয়ে দিয়ে লালকেল্লা পৌঁছোলো অন্নদাতা কৃষকদের মিছিল।
দেশের ৭২ তম প্রজাতন্ত্র দিবসের পুণ্য লগ্নে লালকেল্লায় গিয়ে নিজেদের পতাকা উত্তোলন করেছেন আন্দোলনরত কৃষকরা। তবে তাঁদের এই যাত্রাপথ যে নিষ্কন্টক ছিল না তা বলাই বাহুল্য। দিল্লি পুলিশের সঙ্গে কৃষকদের অনবরত সংঘর্ষের নিদর্শন ছড়িয়ে রয়েছে রাজধানীর রাজপথে। যদিও কৃষক সংগঠন গুলির তরফ থেকে শান্তিপূর্ণ মিছিলের কথাই বলা হয়েছিল বারবার তবু এদিন শান্তিভঙ্গ হয়েছে। এমনকি কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিলের উত্তেজনায় প্রাণও গিয়েছে এক ব্যক্তির। সূত্রের খবর, এদিন দিল্লির একাধিক জায়গায় কৃষক পুলিশ সংঘর্ষ রক্তাক্ত আকার নিয়েছে। সীমান্ত অঞ্চল গুলিতে একের পর এক পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে লালকেল্লার উদ্দেশ্যে এগিয়ে যান কৃষকরা। পুলিশের তরফ থেকেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়। লাঠিচার্জ থেকে শুরু করে কাঁদানে গ্যাস, বাদ ছিল না কোনো কিছুই। উভয়পক্ষের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন, জানা গেছে দিল্লি পুলিশ সূত্রের খবরে।
বস্তুত, এদিনের পূর্ব ঘোষিত ট্র্যাক্টর মিছিল নিয়ে আগেই নির্দিষ্ট পথ জানিয়ে দিয়েছিল দিল্লি পুলিশ। প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে যাতে কোনো ভাবেই ব্যাঘাত না ঘটে সে দিকে ছিল কড়া নজর। বলা হয়েছিল, মঙ্গলবার সকাল ১২ টা নাগাদ কৃষকদের মিছিল নির্দিষ্ট তিনটি রুটে গিয়ে আবার উৎসস্থলে ফিরে আসবে। কিন্তু বাস্তবে হয় তার উল্টো। এদিন সকাল ৮টা থেকেই লাগামছাড়া ভাবে দিল্লির দিকে ধেয়ে আসতে থাকে কৃষকদের মিছিল, যা নিয়ন্ত্রণে আনতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে।এদিনের সংঘর্ষের হিংসাত্মক চেহারার জন্য প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজধানী কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। চারদিক থেকে দিল্লির দিকে যত রাস্তা গেছে, সমস্তই বন্ধ করে দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। ফলে নিত্য যাত্রীদের হয়রানির ছবিটা সহজেই অনুমেয়।