নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই উত্তপ্ত দিল্লির পরিস্থিতি। কিন্তু প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিলকে কেন্দ্র করে যে অশান্তির সাক্ষী থাকল রাজধানী তা নিঃসন্দেহে নজিরবিহীন। সেদিনের ঘটনা দিল্লির কৃষক আন্দোলনের ভবিষ্যতকেই যে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে, কৃষক নেতাদের সিদ্ধান্তে আরো একবার তা স্পষ্ট হল।
কৃষি আইনের প্রতিবাদে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি পায়ে হেঁটে পার্লামেন্ট ভবন পর্যন্ত অভিযান করার কথা ছিল কৃষক সংগঠনগুলির। সেদিন থেকেই শুরু পার্লামেন্টের বাজেট অধিবেশন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের প্রেক্ষিতে কৃষকদের সেই সিদ্ধান্তে কিছু বদল আনা হয়েছে। পদব্রজে পার্লামেন্ট অভিযান আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে সূত্রের খবরে।
এদিন জনৈক কৃষক নেতা দর্শন পাল ঘোষণা করেছেন, “১ ফেব্রুয়ারি বাজেট অধিবেশনের দিন পার্লামেন্ট অভিযানের পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে।” তবে আগামী ৩০ জানুয়ারি পরিকল্পনা মতোই দেশ জুড়ে অনশন, জনসভা এবং বিক্ষোভ চলবে, জানিয়েছেন তিনি।
প্রজাতন্ত্র দিবসের ঘটনার পর কৃষকদের গতিবিধি দেশ জুড়ে নিন্দার ঝড় তুলেছে। দিল্লি পুলিশের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে কৃষক নেতারা হিংসাত্মক বক্তৃতার মাধ্যমে ট্র্যাক্টর মিছিলে অশান্তিকে প্ররোচিত করেছেন। কৃষকদের সঙ্গে সংঘর্ষে দিল্লি পুলিশের ৩৯৪ জন কর্মী আহত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। এখানেই শেষ নয়, প্রজাতন্ত্র দিবসের হিংসার ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না, হুমকি দিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
দিল্লি পুলিশ কমিশনার এস এন শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, “আমরা সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে অভিযুক্তদের সনাক্ত করার চেষ্টা করছি। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। কোনো অপরাধী ছাড় পাবে না।” দর্শন পাল এবং সৎনম সিংয়ের মতো কিছু কৃষক নেতার প্ররোচনাতেই কৃষকরা ব্যারিকেড ভেঙে ছিলেন, জানিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, ২৬ জানুয়ারি আন্দোলনকারী কৃষকদের সঙ্গে দিল্লি পুলিশের মুহুর্মুহু সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয় রাজধানী। নির্ধারিত সময়ের আগেই একের পর এক ব্যারিকেড ভেঙে ট্র্যাক্টর নিয়ে রাজপথে ঢোকেন কৃষকরা। লালকেল্লায় গিয়ে নিজেদের পতাকাও তোলেন।