নয়াদিল্লি: বিরোধীদের তুমুল প্রতিবাদের মধ্যেই রবিবার রাজ্যসভায় ধ্বনিভোটে পাস হয়ে গেল দুটি বিতর্কিত কৃষি বিল৷ আপাতত রাস্ট্রপতির স্বাক্ষরের অপেক্ষা৷ তারপরেই আইনে পরিণত হয়ে যাবে কৃষি বিল৷ এই কৃষি বিলের বিরুদ্ধে এদিন সকাল থেকেই সারাদেশে বিশেষ করে হারিয়ানা ও পাঞ্জাবের কৃষকরা পথে নেমে বিক্ষোভ শুরু করে৷ এই বিক্ষোভের আঁচ যাতে রাজধানীর গায়ে লাগতে না পারে তার জন্য আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছিল দিল্লি সরকার৷ দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়৷ নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুড়ে ফেলা হয় সীমান্তবর্তী এলাকা৷ বিশেষ করে অশোকনগর গাজীপুর এলাকায় কড়া নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়৷
শুরু থেকেই কৃষি সংক্রান্ত বিলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্রের বিজেপি বিরোধী দলগুলি৷ এমনকি কৃষি বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে সামিল হয় তৃণমূল কংগ্রেসও৷ এদিন রাজ্যসভায় বিল পেশকে কেন্দ্র করে ব্যাপক হইচই শুরু হয়৷ রাজ্যসভার ওয়েলে নেমে ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশকে রুল বুক দেখান তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন৷ কৃষি সংক্রান্ত বিল নিয়ে আলোচনার জন্য সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি তোলেন শিবসেনা সাংসদ তথা দলের মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত৷ তাঁর দাবি, ‘‘আপনারা বলছেন যে এই বিল দেশের স্বার্থে আনা হয়েছে৷ সরকার কি গ্যারান্টি দিতে পারবে যে কৃষি সংস্কার বিল পাশ হয়ে যাওয়ার পর কৃষকদের আয় দ্বিগুণ হবে৷ বা কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটবে না৷ এই বিল নিয়ে আলোচনার জন্য সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হোক৷’’
এদিকে কৃষি সংস্কার বিল নিয়ে সরকার তাড়াহুড়ো করছে বলে মন্তব্য করেন সপা নেতা রামগোপাল যাদব৷ বিলটি আনার আগে সরকারের তরফে কোন কৃষক সংগঠনের সঙ্গে কথা বলা হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি৷ কৃষি সংস্কার বিলকে ‘কৃষকদের মৃত্যু পরোয়ানা’ বলে মন্তব্য করেন কংগ্রেস নেতা প্রতাপ সিং বাজোয়া৷ তিনি বলেন, এই বিলে সই করবে না কংগ্রেস৷ এদিন কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার বিল পেশ করার পরেই, দুটি সংশোধনের দাবি জানিয়ে বিলটি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি তোলে সিপিআইএম এবং তৃণমূল কংগ্রেস৷
এদিকে বিরোধীদের চাপের মুখে মুখ খোলেন ট্রেজারি বেঞ্চের সদস্যরা৷ কংগ্রেস আমলে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ হয়নি কেন সে প্রশ্ন তুলে কংগ্রেসকে পাল্টা তোপ দাগে বিজেপি৷ পাশাপাশি কৃষি সংস্কার বিলের বিরোধিতা করায় কংগ্রেসকে দালাল বলে কটাক্ষ করে ওয়াইএসআরসিপি৷ এই বিলটি কৃষকদের দাসে পরিণত করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে ডিএমকে৷ যদিও এইসব বিক্ষোভের মধ্যেই পাশ হয়ে যায় কৃষি সংস্কার বিল৷ কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার বলেন, এই দুটি বিল ঐতিহাসিক এবং এর ফলে কৃষকদের দৈনন্দিন জীবনে পরিবর্তন আসবে৷ দেশের যে কোনও জায়গায় তাঁরা তাঁদের ফসল বিক্রি করতে পারবেন৷ দেশের কৃষক সমাজকে আমি আশ্বস্ত করে বলতে চাই, এই বিল ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) সংক্রান্ত নয়৷