নয়াদিল্লি: বেঙ্গালুরুতে ওয়াইসির মঞ্চ থেকে অমূল্যা লিয়োনার 'পাকিস্তান জিন্দাবাদ' স্লোগান নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। এই ঘটনার জেরে তাঁর বাড়িতে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হামলা চালিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এদিকে ১৮ বছরের তরুণীর কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছিলেন তাঁর বাবা, এমনই শোনা গিয়েছিল কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পার মন্তব্যে। অবশেষে তরুণীর হয়ে সওয়াল করল তাঁর পরিবারই। সদস্যদের কথায়, অমূল্যা তাঁর বক্তব্যে আন্তর্জাতিকতাবাদ এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রতি সম্মান বজায় রাখার কথাই বলতে চেয়েছিলেন।
'পাকিস্তান জিন্দাবাদ' স্লোগান দেওয়ার অপরাধে জেল হেফাজতে রয়েছেন অমূল্যা। এই ঘটনার সমালোচনা করে তাঁর বাবা ওসওয়াল্ড নরোনহা জানিয়েছিলেন, মেয়ের এই ধরনের মন্তব্যকে তিনি সমর্থন করেন না। তাছাড়া আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও তিনি বলেছিলেন। দেশবাসীর ভাবাবেগে আঘাত হানার মতো স্লোগানের বিরোধিতা করেছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্যরাও। কিন্তু ২২ ফেব্রুয়ারি পরিবারের সদস্যদের মুখেই শোনা গেল অমূল্যাকে নিয়ে তাঁদের সওয়ালের কথা। তাঁর পরিবারের এক সদস্যের কথায়, 'অমূল্যার বক্তব্য মাঝপথে থামিয়ে দেওয়ার ফলেই এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।'
রোমান ক্যাথলিক হওয়ার সুবাদে অমূল্যা যে উদার ভালবাসার নীতিতে বিশ্বাসী, সে-ই কথা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, 'তাঁকে (অমূল্যা) তাঁর বক্তব্য শেষ করতে দেওয়া উচিত ছিল। তবেই মূল বক্তব্য সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া যেত।' তাছাড়া গত সপ্তাহে করা অমূল্যার একটি ফেসবুক পোস্টে তাঁর উদার চিন্তাভাবনার পরিচয় মিলেছে বলেও মনে করেছেন কেউ কেউ। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, ‘ভারত জিন্দাবাদ, পাকিস্তান জিন্দাবাদ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, শ্রীলঙ্কা জিন্দাবাদ, নেপাল জিন্দাবাদ, আফগানিস্তান জিন্দাবাদ, চীন জিন্দাবাদ, ভুটান জিন্দাবাদ।’
পরিবারের অন্য সদস্যদের বক্তব্য, অল্প বয়স থেকেই অমূল্যা বক্তৃতায় পটু ছিলেন। তাই তাঁকে কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কাজে লাগাতে পারেন বলে মনে করছেন তাঁরা। একই কথা শোনা গেছে ২০ ফেব্রুয়ারির ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশের মুখে। তাঁদের কথায়, এআইএমআইএম প্রধান আসাউদ্দিন ওয়াইসির সিএএ-বিরোধী সভা থেকে অমূল্যা 'হিন্দুস্তান জিন্দাবাদ, পাকিস্তান জিন্দাবাদ' স্লোগান দিয়েছিলেন। কেন এই স্লোগান দিয়েছিলেন, সেই বিষয়টিই পরে বোঝাতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ততক্ষণে তাঁর হাত থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেওয়া হয়। ফলে অমূল্যার স্লোগানের প্রকৃত অর্থ অসম্পূর্ণ থেকে যায় বলেই মনে করেন ওই প্রত্যক্ষদর্শীরা। পরিবারের সদস্য ছাড়াও প্রত্যক্ষদর্শীদের এই বয়ান আদৌ কি এই মামলার কোনও সুরাহা করতে পারবে, সময় বলবে।