‘বাড়ির লোক বিশ্বাসই করেনি কোটি টাকার চাকরি পেয়েছি’

‘বাড়ির লোক বিশ্বাসই করেনি কোটি টাকার চাকরি পেয়েছি’

bb146e0fb65a9fb1d2b17c94b000072c

খড়গপুর:  ছোট থেকেই অভাব অনটনের মধ্যে বেড়ে ওঠা তাঁর৷ অনেক কষ্টে লোন নিয়ে তাঁর বাবা তাঁকে ভর্তি করিয়েছিলেন খড়গপুর আইআইটি কলেজে৷ সেই ছেলের ঝুলিতেই আজ মোটা মাইনের চাকরি৷ দুই-এক লাখ নয়, নিজের যোগ্যতায় মাইক্রোসফটের মতো প্রতিষ্ঠানে ১ কোটি ২ লক্ষ টাকার প্যাকেজের চাকরি ছিনিয়ে নিয়েছেন বিহারের বাৎসল্য সিং চৌহান৷ এর জন্য টপকাতে হয়েছে পাঁচ-পাঁচটি ধাপ৷ তবে তাঁর কথায়, এই নির্বাচন প্রক্রিয়া খুব একটা কঠিন ছিল না৷ 

বাৎসল্যর বাবা চন্দ্রকান্ত সিং পেশায় একজন ওয়েল্ডার৷ তিনি প্রথম যখন ছেলের সাফল্যের খবরটি শোনেন, তখন বিশ্বাস করতে পারেননি যে বাৎসল্য মাইক্রোসফ্‌ট-এর মতো সংস্থায় এত টাকা মাইনের চাকরি পেয়েছেন। বেশ কিছুক্ষণ বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি৷ চন্দ্রকান্ত সিং বলেন, ‘‘ছেলে যখন বলল ও চাকরি পেয়েছে, তখন চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি৷ কারণ অনেক লড়াইয়ের পর অবশেষে ও এই সফলতা পেয়েছে৷ প্রথমে ও আমাদের বলেছিল, ৯০.৫ লাখ টাকার প্যাকেজ ওর৷ পরে জানতে পারি আসলে তা ১.২ কোটি টাকা৷ 

মাইক্রোসফ্‌ট-এ চাকরি পাওয়া প্রসঙ্গে বাৎসল্য বলেন, ‘‘এটা খুব একটি কঠিন ছিল না৷ তেমন বিরাট কোনও প্রত্যাশাও ছিল না আমার। কিন্তু ইন্টারভিউয়ের সময় মাইক্রোসফট কর্তারা আমাকে পছন্দ করেন।’’বাৎসল্য বলেন, ‘‘আমি যখন ক্লাস টেন পাস করি, তখন জানতামই না আইআইটি কোথায়।’’ ২০০৯-সালে আইআইটির প্রবেশিকা পরীক্ষায় বিশেষ ভালো রেজাল্টও করতে পারেননি তিনি৷ রাজস্থানের কোটা থেকে ভর্তি হয়েছিলেন বাৎসল্য৷ সেখানে তিনজন শিক্ষকের নজরে এসেছিলেন তিনি৷ তাঁর প্রতিভাবে খুঁজে বার করেন তাঁরাই৷ এমনকী তাঁর দিকে আর্থিক সাহায্যের হাতও বাড়িয়ে দেন ওই তিন শিক্ষক৷ তাঁদের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া বাৎসল্যর সাফল্য সম্ভব হত না, নির্দ্বিধায় স্বীকার করে নিয়েছেন বাৎসল্যের বাবা৷ 

তবে নিজের শিকড়কে ভুলতে চান না বাৎসল্য৷ খাগারিয়ার পিছিয়ে পরা ছেলেমেয়েদের জন্য ভবিষ্যতে একটা স্কুল গড়ে তোলার স্বপ্ন রয়েছে তাঁর৷ ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ছেলেমেয়েকে আইআইটি-র কোচিং দিতেও শুরু করেছেন তিনি৷ বাৎসল্য জানিয়েছেন, কেউ যদি সত্যিকারে পড়াশোনা করতে চায়, তাহলে তাঁর সঙ্গে যেন যোগাযোগ করে৷ আনন্দের সঙ্গেই তাঁকে পথ দেখাবেন তিনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *