করোনার জেরে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা, পরিস্থিতি রুখতে কতটা প্রস্তুত ভারত?

স্বাস্থ্যক্ষেত্রে জরুরী অবস্থার জন্য প্রস্তুতি প্রয়োজন।আপতকালীন বরাদ্দের পরিকল্পনা সংক্রান্ত প্রস্তুতি প্রয়োজন।কাঠামোগত সংস্কারের অগ্রগতির লক্ষ্যে সুযোগের সদ্ব্যবহার করা উচিত।দেশীয় চাহিদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ। মুদ্রানীতিতে নমনীয়তা বজায় রাখা।

নয়াদিল্লি: মহাদেশজুড়ে করোনা(COVID-19) সংক্রমণ যেভাবে দ্রুতহারে ছড়িয়ে পড়ছে তাতে রীতিমত অবাক স্বাস্থ্য পেশার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি এবং নীতি নির্ধারকরা। এই রোগের প্রভাব বড় বাজারগুলিকে অনিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে  ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাপী মন্দার আঁচ পাচ্ছে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল। এই অবস্থায়, দেশের অর্থনৈতিক সুরক্ষায় যে পাঁচটি উপায় সরকার অবলম্বন করতে পারে, তার একটা ধারণা দেওয়া হয়েছে 'লাইভ মিন্ট' সংবাদ মাধ্যমে।

স্বাস্থ্যক্ষেত্রে জরুরী অবস্থার জন্য প্রস্তুতি:-

সম্প্রতি আরবিআইয়ের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন যেমন বলেছিলেন, এই মুহুর্তে প্রতিটি দেশকে উন্নতিকরণের প্রকল্পের পরিবর্তে করোনা প্রতিরোধে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। যদিও এখন পর্যন্ত এই রোগের প্রাদুর্ভাবে ভারতে কোনো মৃত্যুর ঘটনা নিশ্চিত করা যায়নি, কিন্তু প্রায় ১.৩ বিলিয়ন জনসংখ্যা একটি দেশে, যেকোনও রকম খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে, এর জন্য জোরদার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

আপৎকালীন বরাদ্দের পরিকল্পনা সংক্রান্ত প্রস্তুতি:-

যদিও করোনার প্রকোপে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কথা মাথায় রেখে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রের নতুন বাজেটে রাজস্ব বরাদ্দের ক্ষেত্রে রক্ষণশীল নীতি নেওয়া হয়েছে, তবে দেশের  আর্থিক ঘাটতির ক্ষেত্রে তা সুদূরপ্রসারী হবেনা। অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে একটি নির্ভরযোগ্য রাজস্ব পরিকল্পনা প্রস্তুত রাখতে হবে।

কাঠামোগত সংস্কারের অগ্রগতির লক্ষ্যে সুযোগের সদ্ব্যবহার করা উচিত:

সমস্ত সম্ভাবনায় কভিড -১৯ বিশ্ব অর্থনীতি একটি 'ব্ল্যাক সোয়ান ইভেন্ট'-এ পরিণত হবে। অর্থাৎ ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে যা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে না। আসন্ন মার্কিন-চীন বাণিজ্য যুদ্ধের সূচনার ফলে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা বেশিরভাগই চীন থেকে সরে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে জিএসটি কাঠামোর সরলীকরণের মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করে ভারতে প্রকৃত অর্থে ব্যবসার সহজ ক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তোলা উচিত।

দেশীয় চাহিদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ

অর্থনীতিবীদ জাহাঙ্গীর আজিজ 'লাইভ মিন্ট'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, বিশ্বজুড়ে চাহিদার ঘাটতি দীর্ঘ সময়ের জন্য বিদ্যমান থাকবে। এই পরিস্থিতিতে দেশীয় চাহিদা বৃদ্ধির জন্য সরকারকে তার নীতিমালায় দৃষ্টিভঙ্গিগত পরিবর্তন আনতে হতে পারে। যে বৃহত্তর ক্ষেত্রে ১০০ কোটির লোকের পরিবর্তে সাশ্রয়ী মূল্যে ভারতীয়কে সমাজের বৃহত্তর অংশের জন্য উৎপাদন বৃদ্ধি্র কথা এর আগেও উল্লেখ করেছেন অর্থনীতিবিদ রথিন রায়।

মুদ্রানীতির নমনীয়তা বজায় রাখতে হবে

করোনার প্রাদুর্ভাবের ফলে উদ্ভুত “অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপে ঝুঁকিপূর্ণ বিকাশের” কথা উল্লেখ করে এই মাসের শুরুর দিকেই স্বল্প ঋণের ক্ষেত্রে সুদের হার ৫০ বেসিক পয়েন্ট কমিয়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সংরক্ষণের পাশাপাশি আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককেও এইধরণের সমস্ত পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − seven =