নয়াদিল্লি: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর (ইডব্লিউএস)-শ্রেণিভুক্তদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ বৈধ বলে রায় দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত৷ এবার থেকে সংরক্ষণের সুবিধা পাবেন উর্চ্চবর্ণের গরিবরাও৷ সোমবার এই ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ৷ অর্থাৎ, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণি (ইডব্লিউএস)-ভুক্ত হলেই ওই দুই ক্ষেত্রে মিলবে সংরক্ষণ৷ তবে প্রশ্ন উঠছে, সমাজের সমস্ত গরিব মানুষই কি সংরক্ষণের সুবিধা পাবেন? এই ব্যবস্থায় কি জাতি, বর্ণ বা সম্প্রদায়ের ভেদাভেদ থাকবে? কবে থেকেই বা চালু হবে ইডব্লিউএস? এই সংরক্ষণ ব্যবস্থার সুবিধা উপভোগ করতে হলে কী কী শর্তই বা পূরণ করতে হবে?
আরও পড়ুন- ব্রেকিং: আর্থিক অনগ্রসরদের জন্য সংরক্ষণ বৈধ, রায় ঘোষণা সুপ্রিম কোর্টের
ভারতে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির নানা বর্ণের মানুষের জন্য শিক্ষা এবং চাকরির ক্ষেত্রে সংরক্ষণের বন্দোবস্ত রয়েছে। যেমন, তফসিলি জাতি (এসটি)-র জন্য ১৫ শতাংশ, তফসিলি উপজাতি (এসসি)-দের জন্য ৭.৫ শতাংশ এবং অন্যান্য জাতি (ওবিসি)-র ক্ষেত্রে ২৭ শতাংশ সংরক্ষণের সুবিধা রয়েছে। তবে এই সংরক্ষণ নিয়ে আগাগোড়াই বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছেন তথাকথিত উচ্চবর্ণের গরিবরা। কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, এই শ্রেণির কথা মাথায় রেখেই সমাজের সর্বস্তরের দরিদ্রদের জন্য এই সংরক্ষণ ব্যবস্থা চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইডব্লিউএস আইন-
২০১৯ সালে সংবিধানের ১০৩তম সংশোধনী বিলটি আইনে পরিণত হয়। ওই বছর ১২ জানুয়ারি এই বিলে লাক্ষর করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ৷ ওই বিলে সংবিধানে ১৫(৬) এবং ১৬(৬) ধারা দু’টি সংশোধন করার পর সরকারের তরফে জানানো হয়, সমাজের আর্থিক ভাবে অনগ্রসর শ্রেণির কথা ভেবে এই সংরক্ষণ ব্যবস্থা চালু করা হল৷ যাতে তাঁরা উচ্চশিক্ষা এবং সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সুবিধা পেতে পারেন। তবে এই সুবিধা পেতে হলে বেশ কিছু শর্ত পূরণ করা জরুরি-
১) এই সংরক্ষণের আওতাভুক্ত হতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর বার্ষিক পরিবারিক আয় ৮ লক্ষ টাকার কম বা মাসে ৬৬,৫০০ টাকার মতো হতে হবে।
২) জমিজমার পরিমাণ ৫ একরের কম হতে হবে।
৩) কোনও নাগরিক যদি ১,০০০ বর্গফুটের কমে ফ্ল্যাট বা বাড়ির মালিক হন, কিংবা পুরসভা এলাকায় ১০০ গজের কম এবং পুর এলাকার বাইরে ২০০ গজের কম বসতজমির থেকে থাকে, তাহলে এই সংরক্ষণের সুবিধা মিলবে৷
এই সংরক্ষণ নিয়ে সমালোচনাও বিস্তর৷ সংবিধানে বলে হয়েছে ৫০ শতাংশের বেশি সংরক্ষণ রাখা যাবে না৷ তবে সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশে তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গনা বা মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যে ৫০ শতাংশের বেশি সংরক্ষণের সুবিধা রয়েছে। শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, এর জন্য আদালতের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে হবে রাজ্যগুলিকে। যদিও কেন্দ্রীয় স্তরে সেই বন্দোবস্ত ছিল না।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>