নয়াদিল্লি: দেশব্যাপী তীব্র বিরোধিতা, জনরোষ, বিরোধী দলগুলির অসম্মতির মধ্যেই আইন হিসেবে মান্যতা পেল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল৷ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বিলে সাক্ষর করেছেন রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ৷
এনআরসি আইনের বিরোধিতায় হিংসার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দেশের উত্তর-পূর্ব রাজ্য গুলিতে৷ প্রতিবাদে বিক্ষোভের খবর আসছে ভারতের অন্যান্য রাজ্য থেকেও৷
এদিকে এই ইস্যুতে বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারেও থমথমে অসম৷ শুক্রবার থেকে গুয়াহাটিতে শান্তিপূর্ণ অনশন আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অল আসাম স্টুডেন্ট ইউনিয়ন৷ গুয়াহাটি, ডিব্রুগড়, বরপেটা, নলবাড়ি, জোরহাট, শোনিতপুর, তেজপুর ও বিশ্বনাথে কার্ফু জারি৷ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি শিলংয়েও৷ যদিও সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে কয়েকটি জায়গায় কিছুক্ষণের জন্য কারফিউ শিথিল করা হয়েছে৷ ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যের স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছে অসম সরকার৷
অসম,ত্রিপুরা,মেঘালয়ে বন্ধ রয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা বাতিল একাধিক দূরপাল্লার বাস, ট্রেন ও বিমান পরিষেবা৷ বহু ট্রেনের যাত্রাপথে বদল আনা হয়েছে৷ বারোবিসা জাতীয় সড়কে আটকে পড়েছে ২০০-র বেশি ট্রাক৷ উত্তর-ভারতেও এনআরসির প্রভাব পড়ছে৷ শিলিগুড়ি-অসম জাতীয় সড়কে ট্রাক চলাচল৷
অসম-বাংলা সীমান্তেও আতঙ্কের পরিবেশ৷ বিশেষত কোচবিহারের বক্সীরহাট সীমান্তে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অসমের ৫ কলাম ও ত্রিপুরায় ৩ কলম সেনা মোতায়েন করা হয়েছে৷
এনআরসি নিয়ে হিংসার জেরে বৃহস্পতিবার গুয়াহাটিতে ৩জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে, গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ১১ জন৷ রাজ্য জুড়ে সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ায় আসাম পুলিশ কর্তৃক কর্মী অখিল গোগোয়াসহ কমপক্ষে ৩০০ বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়৷
এদিকে এনআরসি নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই হঠাৎ করে ভারত সফর বাতিল করেছেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীর ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷ সফর বাতিলের সঙ্গে যদিও এনআরসি বিলের কোনো সম্পর্ক নেই বলেই দাবি করেছে দু’দেশের বিদেশমন্ত্রক৷ তবে দেশের সংবাদ মাধ্যমের কাছে এই বিল নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে বিলটিকে অনৈতিক এবং ভারতের সংবিধান বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রী এ কে মোমিন৷ অন্যদিকে ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনারকে তলব করা হয়েছে৷ বাতিল হতে পারে রবিবার থেকে শুরু হওয়া ইন্দো জাপান সামিট৷
নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনীগুলির সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে৷ কংগ্রেসও বিষয়টিকে শীর্ষ আদালতে নিয়ে যাবে বলে জানিয়ে দিয়েছে৷ সিপিএম এবং তৃণমূল কংগ্রেসও বিলের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে সর্বোচ্চ আদালতে৷