নয়াদিল্লি: দিন কয়েক আগেই করোনার ধাক্কা সামলেছেন। করোনা পরবর্তী জটিলতার কারণে যেতে হয়েছিল হাসপাতালেও। এইসব সামলেই বৃহস্পতিবার সকালে ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় ইডি দপ্তরে হাজিরা দিলেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। এদিন সকাল ঠিক ১১ টায় দিল্লির ইডি অফিসে হাজির হন তিনি। সভানেত্রীর সঙ্গে ছিলেন মেয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় বেআইনি আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন করতে গত জুলাই মাসের শুরুতে কংগ্রেস নেত্রীকে তলব করেছিলেন ইডি আধিকারিকরা। কিন্তু তারপর থেকেই একের পর এক অসুস্থতায় জেরবার সোনিয়া ইডির ডাকে সাড়া দিতে পারেননি। তবে বর্তমানে তিনি অনেকটাই সুস্থ। তাই বৃহস্পতিবার সকালে তিনি ইডি আধিকারিকদের মুখোমুখি হলেন।
উল্লেখ্য জুলাই মাসের ৪ তারিখ সোনিয়া গান্ধীর ইডি দফতরে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারপরেই তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর করোনা পরবর্তী একাধিক শারীরিক জটিলতার কারণে সোনিয়া গান্ধীকে জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বেশ কয়েক দিন হাসপাতালেও থাকতে হয়েছিল। তবে বর্তমানে তিনি সুস্থ। যদিও শারীরিকভাবে এখনও দুর্বল। সে কথা মাথায় রেখেই আজ ইডি আধিকারিকরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করে ব্যবস্থা করেছেন।
জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার ইডি দফতরের পাঁচজন মহিলা আধিকারিক সোনিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। এছাড়া টানা জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন যদি তিনি ক্লান্তি বোধ করেন তাহলে তাঁকে বিশ্রাম করার সুযোগও দেওয়া হবে বলে খবর। এর সঙ্গেই জানা যাচ্ছে, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে সোনিয়া গান্ধীর প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য একজন মেডিকেল অফিসারকেও ইডি দপ্তরে আনা হয়েছে। সঙ্গে উপস্থিত রয়েছেন সোনিয়া গান্ধী আইনজীবিও। এছাড়া মেয়ে প্রিয়াঙ্কা তো আছেনই। যদিও তাঁদের কাউকেই সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বসতে দেওয়া হয়নি বলেই জানা গিয়েছেন। এছাড়া বন্ধ ঘরে যাতে সভানেত্রীর দম বন্ধ না হয়ে আসে তার জন্য একটি বড় এবং খোলা ঘর বাছাই করা রয়েছে যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ বাতাস চলাচল করে। সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে রয়েছে একটি নেবুলাইজার মেশিন। কারণ ৩ ৪ ঘন্টা অন্তর অন্তরই তাঁকে নেবুলাইজার ব্যবহার করতে হচ্ছে। এই সমস্ত জিনিস মাথায় রেখেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন ইডি আধিকারিকরা।
অন্যদিকে এদিনও সোনিয়া গান্ধীর হাজিরায় বিক্ষোভ, আন্দোলন প্রদর্শন করছেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বরা। দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় সভানেত্রীকে ইডির তলবের বিরোধিতা করে ধরনায় বসেছেন কংগ্রেসের কর্মী সদস্যরা। ইতিমধ্যেই রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, উপমুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলটসহ একাধিক শীর্ষ কংগ্রেস নেতাকে আটক করেছে দিল্লি পুলিশ। এছাড়া সংসদ ভবনেও সোনিয়া গান্ধীর হাজিরার বিরোধিতায় ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন কংগ্রেস সাংসদরা। যার জেরে আপাতত বাতিল হয়েছে সংসদের দুই কক্ষের অধিবেশন।