নয়াদিল্লি: CAA, CAB, NRC বা NRP – এই সবের মাঝে পড়ে গত দুই মাস মোদী সরকারকে দেশের সচেতন জনতা ভারতের নিম্নমুখী অর্থনীতির বিষয়ে একটি প্রশ্নও করেননি। সেদিক থেকে দেখতে গেলে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ (এন ডি এ সরকারের এক এবং দুই নম্বর ব্যক্তি – যদিও তিন নম্বর কে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অনেকেই বলেন, এটি মোদী-শাহ সরকার। তাঁদের বক্তব্যে, সন্দেহের অবকাশ নেই।) বিশ্বের সব থেকে বড় গণতন্ত্রের জনতাকে নিঃশব্দে বোকা বানাতে পেরেছেন।
IMF বা আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডারের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা গীতা গোপীনাথ কিছুদিন আগেই বলেছিলেন, তলানিতে যাওয়া অর্থনীতিকে লুকিয়ে রাখতেই নাগরিকত্ব নিয়ে এই লম্ফঝম্প। কিন্তু, শাক দিয়ে তো মাছ ঢাকা যায় না। এই অর্থনৈতিক অধগমন বেশিদিন লুকিয়ে রাখা যাবে না।
তবে যতই সমালোচনা করুন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আশাবাদী মানুষ তা অস্বীকার করার জায়গা কোথায়? এই অর্থনৈতিক দুর্দিনেও তিনি চরম আশাবাদী। তবে এটাই হয়ত রাজধর্ম। রাজাকে তো আশাবাদী থাকতেই হয়। নয়ত প্রজাদের কী দুর্দিশা হবে তা কল্পনাতীত।
দেশের অর্থনীতিতে এখন Stagflation যা Stagnation এবং Inflation এর সম্মিলিত আক্রমণ। Stagnation অর্থে মন্দা বা শ্লথ বৃদ্ধি। Inflation অর্থে মুদ্রাস্ফীতি। প্রতি তিন মাস অন্তর দেশে ত্রৈমাসিক বা কোয়ার্টার বের হয়। গত ৬টি ত্রৈমাসিক দেখিয়েছে, ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার কমেছে। অর্থাৎ দেড় বছরের বেশি সময় ধরে দেশের অর্থনীতি বেহাল। কিন্তু মোদীবাবু আশাবাদী।
অনেকেই বলছেন, অর্থনীতির এই জ্বর, যে সে জ্বর নয়। সাক্ষাৎ ডেঙ্গু। দেশের অর্থনীতির রক্তপরীক্ষা করা হোক। দেখা যাবে 'প্লেটলেট' দিনদিন কমছে। সাধারণ মানুষের পকেটে ইতিমধ্যেই এসিড পড়ছে। ১৫০ টাকা কেজি পেঁয়াজ বা ৩৫ টাকা কিল আলু বা ১৮০ টাকা কেজি মুরগির মাংস এম জনতা খেয়ে হজম করতে পারছে না। CAA, CAB, নরক, NRP – এর মত ভয়ের চাদরে জনতাকে জড়িয়ে রেখে অর্থনীতির ডেঙ্গুজ্বরকে লুকিয়ে রাখা যাবে না।