নয়াদিল্লি: দু’ মাস পেরিয়ে গিয়েছে৷ এখনও লকডাউনে বন্দি দেশ৷ চতুর্থ দফার লকডাউন চলবে ৩১ মে পর্যন্ত৷ কোভিড-১৯ প্যান্ডেমিকে দীর্ঘ লকডাউনে বেহাল দেশের অর্থনীতি৷ তবে প্রতিটি রাজ্যে এর প্রভাব সমান নয়৷ রাজ্যভেদে বদলেছে সমস্যার ধরন৷
সবচেয়ে বেশি রেড জোন জেলা রয়েছে দেশের আটটি রাজ্যে৷ আট রাজ্যের এই জেলাগুলিতে রয়েছে সবচেয়ে বেশি করোনা পজেটিভ৷ স্বাভাবিক ভাবেই এই জেলাগুলিতে লকডাউনের কড়াকড়িও দেশের অন্যান্য অংশের তুলনায় অনেকটাই বেশি৷ অথচ মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানা-এই আট রাজ্য থেকেই আসে ভারতের ৬০ শতাংশ জিডিপি৷ দেশের মোট উৎপাদনের ৬৬ শতাংশই আসে এই আট রাজ্য থেকে৷ নির্মাণ ক্ষেত্রে এই রাজ্যগুলির অবদান ৬০ শতাংশ এবং পরিষেবার ক্ষেত্রে অবদান রয়েছে ৫৩ শতাংশ৷
রাজ্যগুলির অর্থনীতির মধ্যে তারতম্য রয়েছে৷ যার ভিত্তিতে বদলে গিয়েছে তাদের সমস্যার ধরনও৷ ভিন্ন ভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন তারা৷ চূড়ান্ত ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলিকে চিহ্নিত করতে তিনটি সূচক ধার্য করেছে ‘ক্রিসিল’৷ শিল্প ও পরিষেবার উপর নির্ভরশীলতার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু এবং গুজরাত৷ অন্যদিকে, অন্ধ্রপ্রদেশ, রাজস্থান এবং উত্তর প্রদেশ সরকারের সিংহভাগ রাজস্ব আসে জ্বালানি তেল, মদ এবং স্ট্যাম্প ডিউটি থেকে৷ যা লকডাউনের জেরে তলানিতে ঠেকেছে৷
অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ এবং তামিলনাড়ুর সমস্যাটা আবার অনেকটাই ভিন্ন৷ সবচেয়ে বেশি চাকরি হারিয়েছেন এই তিন রাজ্যের মানুষ৷ এই তিন রাজ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক৷ করোনা আক্রান্ত এই আট রাজ্যেজুড়ে রয়েছে দেশের ৬৪ শতাংশ কৃষি, ৬৩ শতাংশ শিল্প৷ তবে শিল্প নির্ভর রাজ্যগুলির তুলনায় কৃষি নির্ভর রাজ্যগুলির উপর আর্থিক মন্দার প্রভাব কিছুটা হলেও কম৷
লকডাউনে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে জ্বালানি, মদ এবং স্ট্যাম্প ডিউটি থেকে আসা রাজস্ব৷ চতুর্থ দফার লকডাউনে খুলেছে মদের দোকান৷ মদ থেকে আসা রাজস্ব অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও অক্সিজেন জোগাবে বলে মনে করা হচ্ছে৷ অবার অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু এবং পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে সবচেয়ে বেশি অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক৷ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে তাঁরাই৷ অধিকাংশ শ্রমিকই আজ কর্মহীন৷