মুম্বই: চিকিৎসকরা যে সবসময়ই মানুষের সেবায় নিয়োজিত, তা আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন এক মহিলা। মৃত্যুর আগেও ওই চিকিৎসক এই ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতিতে নিজেদের যত্ন নেওয়ার কথা বলে গেলেন।
করোনা রোগীদের সেবায় ব্রতী মুম্বইয়ের বিশিষ্ট চিকিৎসক কোভিডে আক্রান্ত হয়েই মারা গেলেন। ৫১ বছরের চিকিৎসক মণীষা যাদব সেওরি টিবি হাসপাতালের সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার ছিলেন তিনি। করোনায় আক্রান্ত হয়ে কিছুদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। তাঁর অবস্থা প্রতিদিন একটু একটু করে খারাপের দিকে যাচ্ছিল। মঙ্গলবার নিজের ফেসবুকে তিনি একটি পোস্ট করেন। সম্ভবত নিজের সময় ফুরিয়ে আসছে তা বুঝতে পেরেছিলেন মণীষা দেবী। তাই সোশ্যাল মিডিয়াকেই বেছে নেন নিজের কিছু কথা শেয়ার করার জন্য। ডঃ মণীষা লেখেন, ‘সম্ভবত এটাই আমার জীবনের শেষ সকাল। আর কখনও এখানে আপনাদের সঙ্গে দেখা হবে না। আপনারা নিজেদের যত্ন নেবেন। দেহের মৃত্যু হয়, কিন্তু আত্মার নয়। আত্মা অমর।’
প্রসঙ্গত, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এখন ভারতের অবস্থা বেসামাল৷ যতদিন যাচ্ছে করোনা পরিস্থিতি তত ভয়ানক হয়ে উঠছে। সর্বকালের সমস্ত রেকর্ড ছাপিয়ে এখন দেশে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় তিন লক্ষ ছুঁতে আর বেশি দেরি নেই। এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা মহারাষ্ট্র এবং দিল্লির। হাসপাতালে বেড নেই, রোগীরা এসে ফিরে যাচ্ছেন প্রতিদিন৷ ওষুধ এবং অক্সিজেনের অভাবে চিকিৎসকদের চেখের সামনেই বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন রোগীরা৷ অথচ তাঁদের কিছুই নেই৷ এমনকি অহর্নিশ করোনা রোগীর সেবা করতে করতে চিকিৎসক, নার্সরাও আক্রান্ত হচ্ছেন৷ কেউ লড়াইয়ে জিতছেন আবার কেউ না পেরে জীবনের হাল ছেড়ে দিচ্ছেন মৃত্যুর কোলে৷ আক্রান্তের সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও৷ সংখ্যাটা এত বেশি যে মৃতদেহও রাখার জায়গা নেই হাসপাতালগুলোতে৷ কোথাও শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার লোক নেই, তো কোথাও মিলছে না শববাহী যান৷ শ্মশানে নিভছে না আগুন, কবরস্থানে মৃতদেহ রাখার জায়গা নেই, বিভীষিকাময় পরিস্থিতি চারিদিকে।