লখনউ: মধ্যরাতে ছাড়া পেলেন কঠোর জাতীয় সুরক্ষা আইনে জেলে যাওয়া উত্তরপ্রদেশের চিকিৎসক কাফিল খান। নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে গলা তুলে বক্তব্য পেশ করায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। মথুরার একটি জেল থেকে তিনি ছাড়া পেলেন। এলাহাবাদ হাইকোর্ট তাঁর গ্রেফতারিকে বেআইনী বলে জানায় এবং যথা শীঘ্র তাঁকে ছেড়ে দেওয়র নির্দেশ দেয় সরকারকে। এলাহাবাদ কোর্টের দাবি চিকিৎসকের বক্তব্যে কোনওভাবেই ঘৃণা কিংবা হিংসা ছড়ানো হয়নি। আদালতের নির্দেশের পর ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে গেলেও চিকিৎসককে ছাড়া না হলে তাঁর পরিবার আদালত অবমাননার মামলা রুজুর হুমকি দেয়।
ডক্টর কাফিল খানের মা নুজহত পরভীন জানিয়েছেন শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ সময় পর তিনি তাঁর ছেলেকে দেখতে, স্পর্শ করতে এবং অনুভব করতে পারবেন। তিনি জানিয়েছেন তিনি ভীষণ খুশি যে তাঁর ছেলে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। মথুরা জেলে যাওযার পথে তিনি সংবাদসংস্থা পিটিআইকে বলেন, তাঁর ছেলে ভীষণ ভলো মানুষ। তিনি দেশ ও সমাজের বিরোধী কখনই নন। তিনি আরও জানান তাঁর পুত্রবধূর জন্মদিন উপলক্ষে তাঁরা একটি কেকও সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন, কারণ পুত্রবধূ মথুরাতেই রয়েছেন।
গত বছরের শেষ দিকে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসএএ নিয়ে বক্তব্য রাখায় তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় সুরক্ষা আইন প্রয়োগ করা হয়। ২৯ জানুয়ারি উত্তরপ্দেশের গোরখপুর নিবাসী এই চিকিৎসককে গ্রেফতার করা হয়। প্রথমে তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ম এবং শ্রেণির ভিত্তিতে মানুষে মানুষে বিভেদ ছড়ানোর অভিযোগে মামলা রুজু হয়। দুদিন পর তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় সুরক্ষা আইনের ধারা দেওয়া হয়। চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি তাঁর জামিন মঞ্জুর হয়। এলাহাবাদ হাইকোর্টে ডক্টর কাফিল খানের আইনজীবী মনোজ কুমার বলেন ডক্টর খানকে জাতীয় সুরক্ষা আইনে আটক করার প্রমাণ হিসেবে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে রাখা তাঁর বক্তব্যের একটি সিডি পেশ করা হয়।
কিন্তু জেলের ভিতর ডক্টর খানকে ওই সিডি দেখার কোনও যন্ত্র কিংবা তাঁর বক্তব্যের কোনও স্ক্রিপ্ট দেওয়া হয়নি। ফলে তিনি জানতেই পারেননি তাঁর বিরুদ্ধে মূল অভিযোগটি কী। ২০১৭ সালে গোরখপুরের সরকারি হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে ৬০জন শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় ডক্টর খানকে সাসপেন্ড, গ্রেফতার ও জেলে পাঠানো হয়। গত সেপ্টেম্বরে তিনি দাবি করেন উত্তরপ্রদেশ সরকারের রিপোর্টে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ থেকে তাঁকে রেহাই দেওয়া হয়েছে। যদিও এই দাবি অস্বীকার করেছে ইউপি সরকার।