নয়াদিল্লি: ‘দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে’, এই মন্তব্য করে রাজ্যসভা থেকেই ইস্তফা দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই আলোড়ন পড়ে গিয়েছে গোটা রাজ্য রাজনীতিতে। তবে এটা কি আচমকা সিদ্ধান্ত নাকি পূর্বপরিকল্পিত, সেই বিষয়ে তর্ক হতে পারে। কারণ মাত্র দু’দিন আগেই প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতার অংশ তুলে ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রশংসা করেছিলেন তিনি।
এদিন রাজ্যসভায় ইস্তফা দিতে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী বলেন, প্রতিটা মানুষের জীবনে এমন একটা সময় আসে যখন তাকে অন্তরাত্মার কথা শুনতে হয়। এই ধরনের পরিস্থিতি এর আগেও রেল মন্ত্রী থাকাকালীন তৈরি হয়েছিল তাঁর জীবনে। এই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আরো বলেন, এই রকম পরিস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত নিতে হয় দেশ আগে না দল আগে, না ব্যক্তি নিজে। দীনেশের কথায়, বাংলায় যে পরিমাণ হিংসা হচ্ছে তা দেখে তার মন ভারাক্রান্ত। দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কোনরকম কাজ করতে না পেরে। সেই কারণেই তিনি আজ রাজ্যসভা থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন সাংসদ হিসেবে। তাৎপর্যের বিষয়, ঠিক দু’দিন আগে অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি রাজ্য সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্য পেশ করেছিলেন তার কিছুটা অংশ তুলে নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়ে তার প্রশংসা করেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ। সেই প্রেক্ষিতেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি তিনি আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে পদত্যাগ করবেন আর পরবর্তী ক্ষেত্রে বিজেপিতে যাবেন? এই নিয়ে এখন জল্পনা তুঙ্গে।
I am personally in agreement with this. The way forward is to let our young talented mind innovate, create and distribute wealth. Pay Govt levies, create jobs. For that, our Govt officers (babus) too, need to encourage the youth . https://t.co/iyDIP6NR4D
— Dinesh Trivedi (@DinTri) February 10, 2021
এদিন রাজ্যসভায় ইস্তফা দেওয়ার সময়ও বিজেপি সরকারের প্রশংসা করেন দীনেশ ত্রিবেদী। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে গোটা বিশ্ব ভারতের দিকে তাকিয়ে ছিল যে, তারা কি করবে আর কি করতে পারে তা দেখার জন্য। সবাই মিলে একজোট হয়ে সেই পরিস্থিতির দুর্দান্তভাবে সামাল দেওয়া গিয়েছে কিন্তু সকলের নেতা ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, মন্তব্য করেন দীনেশ। তাঁর কথা থেতেই পরিস্কার, কার্যত কেন্দ্রীয় সরকারের কাজ এবং প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বকে কুর্নিশ জানিয়েছেন তিনি। তাই আগামী দিনে বিজেপিতে গেলে অবাক হওয়ার মত কিছু থাকবে না বলেই ধারণা। এদিকে দীনেশ ত্রিবেদীর এই আচমকা ইস্তফা মানতে পারছে না তৃণমূল কংগ্রেস। সাংসদ সৌগত রায় জানাচ্ছেন, তিনি আগে থেকে জানতেন যে দীনেশ ত্রিবেদী কিছু ব্যাপারে অসন্তুষ্ট রয়েছেন। তবে তিনি এই ভাবে আচমকা ইস্তফা দেবেন এটা তিনি ভাবতে পারেননি কখনো। তিনি আরো বলেছেন, লোকসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরেও সরকার দীনেশ ত্রিবেদীকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছিল। অসন্তোষ হলে সেই ব্যাপারে তিনি দলের সঙ্গে কথা বলতে পারতেন।