সংসদে গান্ধীগিরি, রাতভর ধর্নায় বসা ৮ সাংসদকে চা খাওয়ালেন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান

সংসদে গান্ধীগিরি, রাতভর ধর্নায় বসা ৮ সাংসদকে চা খাওয়ালেন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান

 

নয়াদিল্লি: কৃষি বিল নিয়ে ধুন্ধুমার সংসদ৷ বিরোধীদের তুমুল প্রতিবাদ সত্ত্বেও সংসদে কৃষি বিল পাশ করা নিয়ে  রাজ্যসভায় শুরু হয় তুলকালাম কাণ্ড৷ চরম বিক্ষোভ শুরু করেন বিরোধী দলের সাংসদরা৷  শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ৮ সাংসদকে এক সপ্তাহের জন্য সাসপেন্ড করে দেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপ-রাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু। প্রতিবাদে সারারাত সংসদের গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধরনায় বসেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, দোলা সেন-সহ রাজ্যসভা থেকে সাসপেন্ড হওয়া আপ, কংগ্রেস ও সিপিএম-এর আট সাংসদ। এদিকে এদিন ভোরে  গান্ধীবাদী নীতি নেন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিং৷ আন্দোলনরত সাংসদদের সঙ্গে দেখা করে চা খাওয়ার প্রস্তাব দেন তিনি৷ আট সাংসদের জন্য নিজে চা নিয়ে আসেন তিনি৷ যদিও সেই চা ফিরিয়ে দেন বিক্ষোভকারী সাংসদরা৷ 

আরও পড়ুন- ভ্যাকসিন বাজারে এলে কীভাবে হবে বিতরণ? পড়ুন বিস্তারিত

সোমবার দিনভর সংসদের গান্ধীমূর্তির সামনে চলে ধরনা-স্লোগান৷ আপাতত রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দের সঙ্গে দেখা করার অপেক্ষায় রয়েছে তাঁরা৷ রাজ্যসভার ডেপুটি স্পিকারের এই ‘চা-রাজনীতি’ মানতে নারাজ তাঁরা৷ তাঁকে ‘কৃষিক বিরোধী’ বলেও কটাক্ষ করেন সাসপেন্ড হওয়া সাংসদরা৷ এই ঘটনার পরেই এদিন টুইট করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ তিনি বলেন, ‘‘দু’দিন আগেই সংসদে যাঁরা তাঁকে অপনাম-হেনস্থা করেছিলেন, আজ ব্যক্তিগতভাবে তাঁদের চায়ের প্রস্তাব দিয়ে হরিবংশজি এটা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে উনি কত বড় মনের মানুষ৷’’ 

জোড় করে ধ্বনি ভোটে কৃষি বিল পাশ করার পরই রাজ্যসভায় শুরু হয় তুলকালাম৷ আট সাংসদকে সাসপেন্ড করতে বাধ্য হন বেঙ্কাইয়া নাইডু৷ কিন্তু সভাকক্ষ ছাড়তে অস্বীকার করেন ওই আট সাংসদ। পরে সভাকক্ষ ছাড়লেও গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধরনায় বসেন ডেরেক ও’ব্রায়েন, দোলা সেন, আপের সঞ্জয় সিং, কংগ্রেসের রাজু সাতাব, সইদ নাজির হুসেন ও রিপুন বোরা এবং সিপিআইএমের কেকে রাগেশ ও ইলামারান করিম। তাঁরা বলেন, আমারা কৃষকদের জন্য লড়ব৷ ‘গণতন্ত্রের হত্যা’, ‘সংসদের হত্যা’ পোস্টার নিয়ে সরকার বিরোধী স্লোগান দিতে শুরু করেন তাঁরা৷ 

আরও পড়ুন- ইতিহাসে প্রথম, যুদ্ধজাহাজে ২ মহিলা অফিসার নিয়োগ করতে চলেছে ভারতীয় নৌবাহিনী

বিক্ষোভকারীদের পাশে দাঁড়িয়ে টুইট করেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷ তিনি বলেন, ‘‘কৃষকদের স্বার্থরক্ষার লড়াই করতে গিয়ে আট সাংসদের সাসপেন্ড হওয়ার ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক৷ এই ঘটনা সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাবের প্রতিফলন ঘটায়৷ তাঁরা গণতান্ত্রিক বিধি ও নীতিকে সম্মান করতে জানে না৷ এই ফ্যাসিবাদী সরকারের সামনে আমরা কিছুতেই মাথা নত করব না৷ সংসদে এবং রাস্তায় নেমে লড়াই চালিয়ে যাবো৷’’ 
অন্যদিকে, বিক্ষোভকারী সাংসদদের সঙ্গে দেখা করেন ন্যাশনাল কনফারেন্স সুপ্রিমো ফারুক আবদুল্লা, জেডিএস প্রধান তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়া, সমাজবাদী পার্টির জয়া বচ্চন, কংগ্রেসের আহমেদ প্যাটেল, এনসিপির সুপ্রিয়া সুলে। আট সাংসদের সঙ্গে প্রায় চার ঘণ্টায় ধরনায় বসেছিলেন কংগ্রেস দিগ্বিজয় সিং। 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven − 5 =