নয়াদিল্লি: তীব্র দাবদাহে এবং রেকর্ড তাপপ্রবাহের পর শেষ পর্যন্ত ঝড় বৃষ্টির দেখা মিলল রাজধানী দিল্লিতে। জানা যাচ্ছে রবিবার মধ্যরাত থেকেই দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয় ব্যাপক ঝড় বৃষ্টি। ঝড়ের দাপট চলেছে সোমবার ভোর পর্যন্ত। সেইসঙ্গে তুমুল বৃষ্টি। রাতভর ধরে চলা এই একটানা ঝড়-বৃষ্টিতে অবশেষে অসহনীয় গরমের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছেন দিল্লিবাসী। তবে দমকা ঝড় এবং সেইসঙ্গে বৃষ্টির তাণ্ডবে কার্যত লন্ডভন্ড রাজধানী। দমকা হাওয়ায় কোথাও পড়েছে পাঁচিল, কোথাও আবার উপড়েছে আস্ত গাছ। এছাড়া দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে বেশ কয়েকটি বাড়িও ভেঙে পড়েছে বলে খবর। ব্যাপক ঝড়-বৃষ্টির জেরে রবিবার ভোররাতের দিল্লিগামী সমস্ত উড়ানও তড়িঘড়ি বাতিল করা হয়েছে । ঝড় বৃষ্টির কারণে এখনও দিল্লির কোনও কোনও এলাকা বিদ্যুৎহীন। এককথায় বলতে গেলে স্বস্তির বৃষ্টির দেখা মিললেও হঠাৎ আসা এই ঝড়বৃষ্টিতে রীতিমতো বিপর্যস্ত রাজধানীর জনজীবন।
অন্যদিকে আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, দিল্লি তথা এনসিআর এলাকায় আপাতত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড় বৃষ্টি চলবে। সোমবার ভোরে ঘণ্টায় প্রায় ৯০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হয়েছে দিল্লিতে। বৃষ্টির জেরে তীব্র গরম থেকে রেহাই মেলায় আপাতত কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন শহরবাসী। অন্যদিকে ঝড়বৃষ্টির কারণে দিল্লির উড়ান পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে দিল্লি বিমানবন্দরের তরফ থেকে। সোমবার সকালে দিল্লি বিমানবন্দরের তরফ থেকে টুইটারে লেখা হয়, ‘খারাপ আবহাওয়ার জেরে দিল্লি বিমানবন্দরে উড়ান পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছে। পরিবর্তন করা হয়েছে সময়সূচীরও। উড়ান সংক্রান্ত পরবর্তী আপডেটের তথ্য জানার জন্য যাত্রীদের সংশ্লিষ্ট উড়ান সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলা হচ্ছে।’
এদিকে এই ব্যাপক ঝড়-বৃষ্টির জেরে দিল্লিতে বেশ কয়েকটি বাড়ি ভেঙে পড়েছে বলে খবর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম দিল্লির নিহাল বিহার এলাকায় ভোর পাঁচটা নাগাদ একটি বাড়ি ভেঙে পড়ে। সকাল ছটায় জ্যোতি নগর এলাকার একটি বাড়ি ভেঙে পড়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। অন্যদিকে মধ্য দিল্লির শংকর রোড এলাকা পশ্চিম দিল্লির মতি নগর এলাকার আরও একটি বাড়ি সকাল সাড়ে ছটার দিকে ভেঙে পড়ার খবর মিলেছে। তবে এই ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে রাজধানীর একাধিক রাস্তায় বড় বড় গাছ ভেঙে পড়ায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এর জেরে চরম দূর্ভোগে পড়েছে নিত্যযাত্রীরা। এছাড়া প্রবল বৃষ্টিতে বেশ কয়েকটি জাতীয় সড়কে জল জমেছে। সেই কারণেও আপাতত বেশ কয়েকটি রাস্তা বন্ধ রয়েছে।
উল্লেখ্য, এপ্রিল মাস থেকে প্রায় প্রতিদিনই নিত্য নতুন রেকর্ড গড়েছে দিল্লির গরম। সম্প্রতি দিল্লির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৯ ডিগ্রিতে পর্যন্ত পৌঁছায়। ১৯৬৬ সালের পর এই প্রথম এমন রেকর্ড গরমের সাক্ষীর হল রাজধানী দিল্লি। সব মিলিয়ে দাবদাহ জ্বালায় যখন কার্যত প্রাণ ওষ্ঠাগত দিল্লিবাসীর, ঠিক তখনই দেখা মিলল স্বস্তির বৃষ্টির। এর জেরে আগামী কয়েকদিন দিল্লির তাপমাত্রা কিছুটা কম থাকবে বলেই জানাচ্ছে আবহাওয়া দপ্তর। তবে আগামীতে ফের রেকর্ড তৈরি করতে পারে দিল্লির গরম এমনটাই আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা।