নয়াদিল্লি: সঙ্গিনীকে হারিয়ে দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর ধরে দিল্লির চিড়িয়াখানায় নিঃসঙ্গ জীবনযাপন শঙ্করের। তার নিঃসঙ্গতার আঁচ পেয়ে তাকে মুক্ত করার দাবি জানিয়ে দিন কয়েক আগে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। দাবি ছিল, এভাবে নিঃসঙ্গ জীবন থেকে মুক্তি দিয়ে শঙ্করকে তার নিজের বাড়ি পাঠানো হোক। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরুক। কিন্তু সম্প্রতি দিল্লি হাইকোর্টের তরফ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আপাতত ঘরে ফেরা হচ্ছে না শঙ্করের। দিল্লি চিড়িয়াখানাতেই থাকবে সে। উল্টে সুদূর আফ্রিকা থেকে তার জন্য কোন সঙ্গিনী আনা যায় কিনা তা তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পশু কল্যাণ পর্ষদের বিশেষজ্ঞদের।
আসলে শঙ্কর একটি হাতির নাম, যে কিনা প্রায় ৭০ বছর ধরে বাস করছে দিল্লির চিড়িয়াখানায়। ২৫ বছর আগে তার সঙ্গিনীও প্রয়াত হয়েছে। তারপর থেকেই বড় একার জীবন শঙ্করের। আসল বিষয়টি হল ‘সেন্ট্রাল জু অথরিটি’-এর নিয়ম অনুযায়ী কোন প্রাণীকে তার সমপ্রজাতির সঙ্গী কিংবা সঙ্গিনী ছাড়া চিড়িয়াখানায় রাখা যায় না। সেক্ষেত্রে শঙ্করের সঙ্গিনী যেহেতু ২৫ বছর আগে মারা গিয়েছে তাই তাকে একা চিড়িয়াখানায় আটকে না রেখে যেখান থেকে তাকে আনা হয়েছে অর্থাৎ আফ্রিকার জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে আসা হোক এমনটাই দাবি নিয়ে কিছু পশুপ্রেমী সংস্থা সম্প্রতি দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। কিন্তু হাইকোর্টের বিচারপতি সতীশ চন্দ্র এবং বিচারপতি সুব্রহ্মনম প্রসাদের বেঞ্চ বুধবার সাফ জানিয়ে দিয়েছে, শঙ্করের সঙ্গিনী হওয়ার জন্য যোগ্য আফ্রিকান প্রজাতির কোনও মাদি হাতিকে নিয়ে আসা সম্ভব কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে তারপরেই শঙ্করের মুক্তি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করবে আদালত। মূলত সেই কারণেই হাইকোর্ট বুধবার সেন্ট্রাল জু অথরিটি এবং অ্যানিমাল ওয়েলফেয়ার বোর্ডের বিশেষজ্ঞদের এই বিষয়ে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। সেই কমিটির রিপোর্ট পেশের পরেই এ বিষয়ে রায় ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে দিল্লি আদালত।
উল্লেখ্য, দিল্লি চিড়িয়াখানার বাসিন্দা আফ্রিকান প্রজাতির এই হাতিটিকে ভারত এনেছিলেন তৎকালীন ভারতের রাষ্ট্রপতি শঙ্করদয়াল শর্মা। সেই সময় জিম্বাবোয়ে সরকার এই আফ্রিকান হস্তিশাবকটিকে উপহারস্বরূপ ভারতে পাঠিয়েছিল তৎকালীন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে। সেই থেকেই শঙ্করের বাস দিল্লির চিড়িয়াখানায়।