নয়াদিল্লি: ক্ষমতায় আসা ইস্তক দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একের পর এক জনহিতকর প্রকল্প আমজনতার নজর কেড়েছে৷ আর করোনা পরিস্থিতিতেও দিল্লির দশা বেহাল হলেও, বিপদের মোকাবিলায় তাঁর ভূমিকা যথেষ্ট প্রশংসনীয় বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল৷ কোভিড-১৯-এর দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশ যখন জেরবার, তখন আরও একটি মানবিক ঘোষণা করলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি জানিয়েছেন, করোনার থাবায় দিল্লিতে অনাথ হয়ে যাওয়া শিশুদের পড়াশোনা ও অন্যান্য দায়িত্ব নেবে তাঁর সরকার৷ শুধু তাই নয়, যে সমস্ত পরিবার তাঁদের একমাত্র রোজগেরে সদস্যকে এই করোনায় হারিয়েছে, সেই পরিবারগুলোর দেখভালের দায়িত্বও তাঁদের বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল৷
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশে সংক্রমণের অন্যতম ‘হটস্পট’ হয়ে উঠেছিল দিল্লি৷ সংক্রমণ তো লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিলই, তার সঙ্গে ছিল অক্সিজেনের ঘাটতি ঘিরে মৃত্যুমিছিল৷ সব মিলিয়ে এক অসহায় পরিস্থিতি৷ তবে সুফল দিয়েছে লকডাউনের সিদ্ধান্ত। আশার আলো দেখিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে সংক্রমিতের সংখ্যা নেমে গিয়েছে ১০ হাজারেরও নীচে৷ এই সুখবর শোনানোই শুধু নয়, এদিন আরও একটি মহৎ ঘোষণা করেন কেজরিওয়াল৷ জানিয়ে দেন, দিল্লিতে যে শিশুরা করোনায় বাবা-মা’কে হারিয়েছে, তাদের পড়াশোনা ও অন্যান্য দায়িত্ব সরকারের।
কেজরিওয়ালের বক্তব্য, ‘বিগত দিনগুলো আমাদের সকলের খুবই যন্ত্রণায় কেটেছে৷ একাধিক মৃত্যুর সম্মুখীন হয়েছে বহু পরিবারই৷ বাবা-মা দু’জনকেই হারিয়েছে অনেক শিশু৷ এই কষ্টে আমি তাদের পাশে আছি। যে শিশুরা অভিভাবকদের হারাল, তাদের পড়াশোনার দায়িত্ব আমাদের। সরকার তাদের বেড়ে ওঠার সব খরচ জোগাবে৷ এর পাশাপাশি প্রতিবেশী ও পরিবারগুলোকেও আমি বলতে চাই, আপনারাও ওদের খেয়াল রাখুন। এছাড়াও যে সমস্ত অভিভাবক তাঁদের সন্তানকে এই কোভিডে হারিয়েছেন, যে সমস্ত পরিবার তাদের একমাত্র উপার্জনকারী সদস্যকে হারিয়েছেন, আমরা তাঁদেরও দেখভাল করব৷’ তাঁর বরাভয়, ‘ম্যায় হুঁ না।’
মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে করোনার সংক্রমণ অনেকটাই কমেছে দিল্লিতে৷ এই সংক্রমণ কমার কৃতিত্ব দিল্লিবাসীকেই দিচ্ছেন কেজরিওয়াল৷ উল্লেখ্য, গত ২০ এপ্রিল দিল্লিতে সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ২৮ হাজার। তার পর থেকে তা ক্রমে বাড়লেও, বর্তমানে সংক্রমণের হার নেমে এসেছে দৈনিক সাড়ে ৮ হাজারে। করোনায় পজিটিভ হওয়ার হার যেখানে গত ২২ এপ্রিল পৌঁছে গিয়েছিল ৩৬ শতাংশে, এখন তা কমে হয়েছে ১২ শতাংশ। আর তার পুরো কৃতিত্ব দিল্লির বাসিন্দাদের দিয়েই কেজরিওয়াল বলেছেন, কড়া নিয়ম মেনে এই জায়গায় পৌঁছনো গেলেও আত্মতুষ্টির জায়গা নেই। আরও কড়া না-হলে ফের বাড়বে সংক্রমণ। দৈনিক সংক্রমণের হারকে শূন্যে নামিয়ে আনার সংকল্পের কথাও বলেছেন কেজরিওয়াল৷