বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার ও ফাইনাল পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত

শিশোদিয়া বলেন, নজিরবিহীন সময়ে নজিরবিহীন সিদ্ধান্তের প্রয়োজন। বিষয়টি জটিল ছিল যেহেতু সেমিস্টারে কোনও অধ্যয়ন বা অন্য কোন একাডেমিক কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়নি। কোনও পড়াশোনা ছাড়াই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত সম্ভব ছিল না। সুতরাং আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে বিগত ফলাফলের ভিত্তিতে পরীক্ষা বাতিল করতে এবং মূল্যায়নের অন্য কোনও প্রগতিশীল পদ্ধতি  অবলম্বন করে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী সেমিস্টারে উত্তীর্ণ করার কথা বলেছি।

নয়াদিল্লি: সমস্ত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা বাধ্যতমূলক। মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের এই নির্দেশিকা সত্বেও করোনা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার নেওয়ায় দিল্লির প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার ও ফাইনাল পরীক্ষা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। শনিবার দুপুরে এক সাংবাদিক বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানালেন দিল্লির শিক্ষামন্ত্রী মণীশ শিশোদিয়া। তিনি বলেছেন, অতিমমারীর কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে মূল্যায়নের কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে সমস্ত ছাত্রছাত্রীকে উত্তীর্ণ করে তাদের ডিগ্রি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে।

তিনি আরও জানান, পরীক্ষা নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের অনিশ্চিয়তা দূর করতে দিল্লি সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিলিপি দেশের প্রতিটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় পাঠিয়ে দেওয়া হোক, এই আবেদন জানিয়ে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিঠি লিখেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দিল্লি সরকারের অধীনে থাকা রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে রয়েছে জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয়, দিল্লি টেকনোলজিক বিশ্ববিদ্যালয়, আম্বেদকর বিশ্ববিদ্যালয়, গুরু গোবিন্দ সিং ইন্দ্রপ্রস্থ বিশ্ববিদ্যালয়, নেতাজি সুভাষ প্রযুক্তি প্রযুক্তি এবং মহিলাদের জন্য ইন্দিরা গান্ধী দিল্লি কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়।

দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী শিশোদিয়া, যিনি সেরাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীও বলেছেন, মহামারীজনিত কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পড়াশোনা ব্যাহত হয়েছিল এবং পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি।  শিশোদিয়া বলেন, ‘‘নজিরবিহীন সময়ে নজিরবিহীন সিদ্ধান্তের প্রয়োজন। বিষয়টি জটিল ছিল যেহেতু সেমিস্টারে কোনও অধ্যয়ন বা অন্য কোন একাডেমিক কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়নি। কোনও পড়াশোনা ছাড়াই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত সম্ভব ছিল না। সুতরাং আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে বিগত ফলাফলের ভিত্তিতে পরীক্ষা বাতিল করতে এবং মূল্যায়নের অন্য কোনও প্রগতিশীল পদ্ধতি  অবলম্বন করে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী সেমিস্টারে উত্তীর্ণ করার কথা বলেছি। উচ্চশিক্ষার জন্য বহু ছাত্রছাত্রীর ডিগ্রি প্রয়োজন। তাই আগের পরীক্ষার ভিত্তিতে তাঁদের ডিগ্রি দেওয়া হবে।’’

এর আগে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় সমস্ত পরীক্ষা অগাস্ট অবধি স্থগিত রেখেছিল। তাই আদৌ পরীক্ষা হবে কিনা তার নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে। ইতিমধ্যে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা বাতিল করার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন জমা পড়েছে। যেখানে আগের পরীক্ষার ভিত্তিতে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের ডিগ্রি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।  সারাদেশের সমস্ত কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পরীক্ষা বাতিল করার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধটি গ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী এবং খুব তাড়াতাড়ি কিছু নির্দেশকা দেবেন বলেও আশা প্রকাশ করেছেন শিশোদিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 1 =