নয়াদিল্লি: দেশজুড়ে লাগামছাড়া করোনা পরিস্থিতিতে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের মতো প্রথম সারির সৈনিকদের থেকে দ্বিতীয় সারির যোদ্ধা হিসেবে পরিচিত পুলিশও যে পিছিয়ে নেই তা বারবার প্রমাণ করে দিচ্ছেন তাঁরা৷ করোনা আবহে তাঁরা প্রায় সামনের সারিতে দাঁড়িয়েই কাজ করে চলেছেন৷ দিন কয়েক আগেই এক মহিলা ডিএসপিকে দেখা গিয়েছিল গর্ভবতী অবস্থায় রাস্তায় পথচলতি মানুষকে করোনার বিধিনিষেধ সম্পর্কে সতর্ক করতে৷ এবার করোনায় মৃতদের সৎকারের কাজে হাত লাগাল দিল্লি পুলিশ৷ দিল্লি পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর রাকেশ কুমার তাঁর অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন৷
দিল্লির হজরত নিজামুদ্দিন থানায় কর্মরত এএসআই রাকেশ কুমার ইতিমধ্যেই নিজে হাতে ৫০ জনের বেশি করোনায় মৃতের দেহ পুড়িয়েছেন৷ ১৩ এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত তিনি ১১০০ জন মানুষকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন৷ এই সব মানুষের প্রিয়জনের দেহ সৎকারে সাহায্য করেছেন রাকেশ কুমার৷ নিজের জীবন বাজি রেখে দিনরাত এক করে কাজ করে চলেছেন তিনি৷ তিনি দু’টি ভ্যাকসিনের ডোজ পেয়েছেন৷ আর ভ্যাকসিনের ভরসাতেই করোনা লড়াইয়ে মানুষকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন তিনি৷ তাঁর বিশ্বাস, যাঁরা অন্যদের দুর্দিনে সাহায্য করেন, ঈশ্বরও তাঁদের মঙ্গল করে৷ তিনি বলেন, ‘আমি এখনও পর্যন্ত ১১০০ জনের পাশে দাঁড়াতে পেরেছি৷’ ৫৬ বছর বয়সি রাকেশের তিনটি সন্তান রয়েছে৷ এর মধ্যে এক মেয়ের বিয়ের দিন ঠিক হয়েছিল৷ তবে করোনা পরিস্থিতিতে কোনও রকম উৎসব-উদযাপন করা সম্ভব নয় বলে তিনি মেয়ের বিয়ের দিন পিছিয়ে দিয়েছেন৷ এখন হাজার হাজার মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন রাকেশ কুমার৷
প্রসঙ্গত, দেশের করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে৷ গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লক্ষ ১৪ হাজার ১৮২ ৷ মৃত্যু হয়েছে ৪০০০ জনের ৷ বুধবার দেশজুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪,১২,২৬২ ৷ মৃত্যু হয়েছিল ৩৯৮০ জনের ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অনেক রাজ্যেই লকডাউন জারি হয়েছে৷