‘মৃত’ মাসুদ আজহার! কীভাবে জঙ্গি শিবিরের মাথা হয়ে উঠেছিল এই মৌলানা?

নয়াদিল্লি: কয়েকদিন আগেই পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি জানিয়েছিলেন গুরুতর অসুস্থ মাসুদ আজহার। কুরেশি বলেছিলেন, মাসুদ এতটাই অসুস্থ যে বাড়ি ছেড়ে বেরনোরও উপায় নেই। এর মধ্যেই সামনে এল এক বিস্ফোরক তথ্য। সংবাদসংস্থা আইএএনএস-এর দাবি, মৃত্যু হয়েছে মাসুদ আজহারের। এই খবরের সত্যতা ভারত ও পাক সরকারের তরফে এখনও স্বীকার করা হয়নি৷ মৌলানা মাসুদ আজহার৷ আলোচিত একটি

9d748ef0a855214206ba0db5dce151a9

‘মৃত’ মাসুদ আজহার! কীভাবে জঙ্গি শিবিরের মাথা হয়ে উঠেছিল এই মৌলানা?

নয়াদিল্লি: কয়েকদিন আগেই পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি জানিয়েছিলেন গুরুতর অসুস্থ মাসুদ আজহার। কুরেশি বলেছিলেন, মাসুদ এতটাই অসুস্থ যে বাড়ি ছেড়ে বেরনোরও উপায় নেই। এর মধ্যেই সামনে এল এক বিস্ফোরক তথ্য। সংবাদসংস্থা আইএএনএস-এর দাবি, মৃত্যু হয়েছে মাসুদ আজহারের। এই খবরের সত্যতা ভারত ও পাক সরকারের তরফে এখনও স্বীকার করা হয়নি৷

মৌলানা মাসুদ আজহার৷ আলোচিত একটি নাম। পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশে ১৯৬৮ সালে জন্ম তাঁর৷ বাবা আল্লা বক্স সাবির ছিলেন সরকারি স্কুলের হেডমাস্টার৷ মূলত, ডেয়ারি ও পোলট্রি ব্যবসা ছিল পরিবারের৷ ২০০১ সালে সংসদ চত্বরে বিস্ফোরণে নাম জড়ায় এই বাড়িরই ছেলে মাসুদের৷

ছোটবেলার স্কুল ছেড়ে জামিয়া উলুম-ই-ইসলামি স্কুলে ভর্তি হয় মাসুদ। তখন থেকেই অমুসলিম ব্যক্তিদের প্রতি বিদ্বেষ তৈরি হয় তার। পড়াশোনায় ভাল হাফিজ পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ও। নিজে স্কুলে পড়াত মাসুদ আর বাড়ির ব্যবসাও দেখত। অসংখ্য বইও লিখেছে সে। তবে বেশিরভাগই জঙ্গি কার্যকলাপকে সমর্থন জানিয়ে। পত্রিকার সম্পাদনা করার সূত্রেই অল্পবয়সীদের মধ্যে আরও বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সে। ১৯৯৪ সালে হরকত উল মুজাহিদিন নামে কাশ্মীরি জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত থাকার অপরাধে গ্রেফতার করা হয় তাকে। ততদিনে সোমালিয়া ও ব্রিটেনেও একাধিকবার গিয়েছে সে জঙ্গি কার্যকলাপকে সক্রিয় করতে চেয়ে।

১৯৯৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমান আইসি ৮১৪ কাঠমান্ডু থেকে দিল্লি আসছিল। বিমানটিকে ভারতের আকাশ থেকে ছিনতাই করে আফগানিস্তানের কন্দহরে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৫৪ জন যাত্রীর প্রাণের বিনিময়ে মাসুদ আজহার, মুস্তাক আহমেদ ‌জ়ারগর ও আহমেদ উমর সঈদ শেখের মতো জঙ্গিদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয় অটলবিহারী সরকার। মুক্তি পেতেই ২০০০ সালে জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গিগোষ্ঠী গড়ে তোলা শুরু করে মাসুদ। কাশ্মীরে জঙ্গি কার্যকলাপ সক্রিয় করা থেকে সংসদে হামলা, সবকিছুতেই প্রধান মাথা ছিল মাসুদ। ২০০২ সালে গৃহবন্দি দশা থেকে মাসুদকে পাকিস্তান মুক্তি দেওয়ার পর থেকেই আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। তালিবান ও লস্কর-ই-তইবা জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে মাসুদের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই জানিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক সংস্থার গোয়েন্দারা।

২০০২ সালে মার্কিন সাংবাদিক ড্যানিয়েল পার্লকে অপহরণ ও খুনের অভিযোগ ওঠে শেখ আহমেদ সইদ ওমর নামে আজহার ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির বিরুদ্ধেই। এর পরই আমেরিকা মাসুদের হেফাজত পেতে সক্রিয় হয়ে ওঠে। আমেরিকা মাসুদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করতে চেয়ে এও জানায়, কন্দহর বিমান অপহরণের সময় এক মার্কিন নাগরিকও সেই বিমানে ছিল। যদিও পাকিস্তান বলে আজহার হাইজ্যাকার নয়। এর পরই ভারতের গোয়েন্দাদের কাছে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড লিস্ট’-এ চলে আসে মাসুদের নাম। পাকিস্তান যদিও বারবারই অস্বীকার করেছে তা। রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে আন্তর্জাতিক মহল থেকে বারবারই চাপ এসেছে মাসুদকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে চেয়ে। জইশ প্রধানের সংগঠন জইশ ই মহম্মদকে রাষ্ট্রপুঞ্জ সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে ঘোষণা করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *