দেশের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি পদে ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, তাঁর সম্পর্কে কিছু অজানা কথা

দেশের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি পদে ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, তাঁর সম্পর্কে কিছু অজানা কথা

32d20ca4da9fd097c51710dd3bdd0ec9

নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ নিতে চলেছেন বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়৷ ২০২২ সালের ৯ নভেম্বর থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন তিনি৷ সোমবার দেশের ৫০ তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে তাঁর নাম মনোনীত করেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু৷

আরও পড়ুন- নিয়োগ দুর্নীতি জ্বলছে বাংলা, ওডিশায় খারিজ অস্থায়ী পদ, স্থায়ীকরণের পথে ৫৭ হাজার কর্মী

দেশের বর্তমান প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিত গত অগস্টে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পান। চলতি বছরের ৮ নভেম্বর তাঁর অবসর নেওয়ার কথা। ফলে আগামী ৯ নভেম্বর থেকে দেশের প্রধান বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব নেবেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়। তাঁর কার্যকালের মেয়াদ দু’বছর। প্রথা অনুযায়ী, দেশের প্রধান বিচারপতি অবসরগ্রহণের আগে পরবর্তী প্রধান বিচারপতির নাম প্রস্তাব করে যান। সেই প্রথা মেনেই সুপ্রিম কোর্টের সব বিচারপতিদের নিয়ে বৈঠকের পর কেন্দ্রের হাতে চিঠিতে বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নাম উল্লেখ করেছিলেন প্রধান সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান বিচারপতি ললিত। 

১৯৯৮ সালে দেশের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। ২০০০ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত তিনি ছিলেন বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি৷ ২০১৩ সালে এলাহাবাদ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথগ্রহণ করেন। ২০১৬ সালের মে মাসে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হন।

উল্লেখ্য, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বাবাও ছিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি৷   তিনিও দেশের প্রধান বিচারপতির পদ অলংকৃত করেছিলেন। ১৯৭৮ সালে থেকে ’৮৫ সাল পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি পদে নিযুক্ত ছিলেন তিনি।

দিল্লির সেন্ট স্টিফেন কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করার পর হার্ভাড ল স্কুল থেকে আইনে স্নাতকোত্তর ও ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। ভারতের সংবিধান, তুলনামুলক সাংবিধানিক আইন, হিউম্যান রাইটস, জেন্ডার জাস্টিস, পাব্লিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশন, ক্রিমিনাল আইন এবং কমারশিয়াল আইন সংক্রান্ত মামলায় গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছিলেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়৷ এমনকী তাঁর বাবার দেওয়া দুটি রায়ও বদলে দিয়েছিলেন তিনি৷

২০১৭ সালে বিচারপতি চন্দ্রচূড় এবং তাঁর নয় সদস্যের বেঞ্চ রায় দেয়, ব্যক্তিগত বিষয় গোপনীয়তার অধিকার সকলেরই আছে৷ এটা প্রত্যেকের প্রাথমিক এবং গুরুত্বপূর্ণ অধিকার। ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত আমাদের দেশে ব্যক্তিগত বিষয় গোপন রাখার অধিকার ছিল না৷ সেই সময়ে দেশে জারি জরুরি অবস্থা৷ কিন্তু, সেই অবস্থা কেটে যাওয়ার পরও এই অধিকার ফিরে আসেনি৷ ইন্দিরা গান্ধীর সরকার যখন জরুরি অবস্থা ঘোষনা করেন তখন খানিকটা চাপের মুখেই বিচারপতি ডি.ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বাবা ওয়াই ভি চন্দ্রচূড় সহ চার বিচারপতি রায় দিয়েছিলেন, জরুরি অবস্থার সময় কোনও ব্যক্তির ব্যক্তিগত বিষয় বলে কিছু থাকবে না। সব কিছু জানবে সরকার। এই অধিকার রক্ষার জন্য কেউ আদালতেও যাতে পারবে না৷ তখন একা এর বিপক্ষে লড়েছিলেন বিচারপতি এইচ আর খান্না। এর ৪১ বছর পর এই আইনের বিপক্ষে সরব হন ডি.ওয়াই চন্দ্রচূড়৷ 

বাবার দেওয়া দ্বিতীয় যে রায় তিনি পালটে দিয়েছিলেন সেটা হল ব্যাভিচার আইন। বর্তমান ব্যভিচার আইনে বলা হয়েছে, কোনও পুরুষ যদি কোনও বিবাহিত নারীর সঙ্গে তাঁর স্বামীর অনুমতি ছাড়া সম্পর্ক স্থাপন করেন তাহলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। এই অপরাধে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা হবে৷ আগে এই আইনে কোনও পুরুষ কোনও বিবাহিত নারীর সঙ্গে তাঁর স্বামীর অনুমতি ছাড়া সম্পর্ক স্থাপন করলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে ধরা হত না।