কলকাতা: ‘আসানি’র চোখ রাঙানি থেকে এখনও নিস্তার মেলেনি৷ স্থলভাগে আছড়ে না পড়লেও আবহাওয়াবিদরা জানিয়ে দিয়েছেন, আসানি’র জেরে বৃষ্টির হাত থেকে রেহাই পাবে না বাংলা৷ ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব থেকে একটুর জন্য রক্ষা পেলেও, চোখ রাঙাচ্ছে আরও একটি সাইক্লোন৷ হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে ইতিমধ্যেই একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরির সম্ভাবনা দেখা গিয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম হবে ‘করিম’। যেটি হ্যারিকেন ২ ক্যাটাগরিতে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ এখনই ‘করিম’ নিয়ে স্পষ্ট কিছু জানায়নি দিল্লির মৌসম ভবন৷ তবে করিম তৈরি হলে নিশ্চিতভাবেই বেশ কয়েকটি রাজ্যে প্রভাব ফেলবে৷
আরও পড়ুন- জন্মহার নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে ভারতে! সবথেকে বেশি কমছে মুসলিমদের মধ্যে
ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিভিন্ন জেলায়৷ আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, এই মুহূর্তে পশ্চিম মধ্য ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে আসানি। ঘণ্টায় ১০ কিমি বেগে অগ্রসর হচ্ছে। অন্ধ্রপ্রদেশের কাঁকিনাড়া থেকে অশনির দূরত্ব মাত্র ২৬০ কিমি। বিশাখাপত্তনম থেকে এর অবস্থান ৩০০ কিমি দূরে৷ ওডিশার গোপালপুর থেকে আসানির দূরত্ব ৪৯০ কিমি। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, সমুদ্রেই শক্তি হারাবে এই ঘূর্ণিঝড়৷ মঙ্গলবারই সমুদ্রের উপরেই হালকা বাঁক নিয়ে ওড়িশা উপকূলের দিকে মুখ ঘোরাবে এটি।
ঘূর্ণিঝড় আসানির নামকরণ করেছে পড়শি দেশ শ্রীলঙ্কা। সিংহলি ভাষায় এর অর্থ ক্রোধ বা রাগ। ২০২০ সালে দিল্লির মৌসম ভবন বা IMD-র পক্ষ থেকে ১৬৯টি সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। ১৩টি ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের (WMO) সদস্য দেশগুলির সঙ্গে আলোচনার পরই ১৬৯টি ঝড়ের নামকরণ করা হয়। WMO হল রাষ্ট্রসংঘেরই একটি এজেন্সি৷ যে ১৩টি দেশ এই নামকরণ করেছে, সেই দেশগুলি হল ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, ওমান, ইরান, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, ইয়েমেন, মালদ্বীপ, কাতার, সৌদি আরব।
এদিকে আসানির প্রভাবে মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়ায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস৷ আজ থেকেই মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। অন্যদিকে আসানির প্রভাবে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম, বিশাখাপত্তনম, পূর্ব গোদাবরি-সহ বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি চলবে।
অশনির প্রভাবে ওডিশাতেও বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে। ওডিশার খুরদা, গঞ্জাম, পুরী, কটক, ভদ্রকে সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে। সতর্কতা অবলম্বন করে চার উপকূলবর্তী এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ বুধবার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে গঞ্জা, খুরদা, পুরী, জগৎসিংপুর ও কটকে৷ বৃষ্টির সঙ্গে ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বলেও পূর্বাভাস রয়েছে। ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৬০ কিমি। কিন্তু আসানি বিদায় নেওয়ার পরেও স্বস্তি মিলবে না৷ পিছু পিছু আসছে আরও এক ঘূর্ণিঝড়! চোখরাঙাচ্ছে সাইক্লোন ‘করিম’৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>