বেঙ্গালুরু: কোভিড ১৯ পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠেছে। সঙ্কটের মুখে বিশ্ববাসী। তবে আরওই করুণ পরিস্থিতি দৃষ্টিহীনদের ক্ষেত্রে। যেহেতু তাঁরা দেখতে পান না। স্পর্শের মাধ্যমেই অনুভব করেন, তাই তাঁদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। কর্নাটকের চিক্কামাগুলুরুর বাসিন্দা সুনীল রমেশ কুমার এমনই করুণ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরলেন। ন্যাশনাল ব্লাইন্ড ক্রিকেট দলের অধিনায়ক তিনি। করোনা মহামারী তাঁর জীবনে সৃষ্টি করেছে গভীর সঙ্কট।
কর্নাটকের বাসিন্দা সুনীল রমেশ কুমাএ বলেন, 'আমার কাছে সবই যেন থেমে আছে। গত পাঁচ মাস ধরে বাড়ির বাইরে পা রাখতে পারছি না। আমার পরিবার সর্বক্ষণ নিষেধ করছে বাড়ির বাইরে যেতে। যেহেতু আমাদের জীবন স্পর্শের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল, তাই এই সমস্যা আরও জটিল হয়ে উঠেছে। ঘরের মধ্যে আমি ক্রিকেটের উপযুক্ত পরিবেশ পাচ্ছি না। খেলতে পারছি না আমি। ভীষণ কঠিন সময় এটা।'
কীভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করবেন সুনীল, তা তাঁর জানা নেই। সুনীলের মতো জটিল সমস্যার মুখে পড়েছেন অন্যান্য দৃষ্টিহীনরাও। ছোটবেলায় দুর্ঘটনার জেরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন রিগজিন ডোলমা। তিনি বলেন, 'দৃষ্টিশক্তি হারানোর পর একমাত্র স্পর্শই আমাদের ভরসা। কিন্তু রেডিও, টিভি এমনকী, সর্বত্রই এক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা। আমি আমার ভাই, বোনদের সঙ্গেও সময় কাটাতে পারছি না একটু। বাড়ির বাগানে যাওয়ার অনুমতিটুকু রয়েছে। ওখানেই সময় কাটাই। এই পরিস্থিতি কেটে সুদিন আসবে, এটুকুই আশা রাখি।'
এদিকে ন্যাশনাল ব্লাইন্ড ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সুনীল বলেন, 'দৈনন্দিন কাজের ক্ষেত্রে আমার পরিবার সবসময় আমাকে সাহায্য করছে। এই সঙ্কটের পরিস্থিতিতে আমার পাশে দাঁড়িয়েছে ক্রিকেট বোর্ডও। প্রতি মাসে আর্থিক সাহায্য করছে। আমি জানি আমার মতো বিশেষভাবে সক্ষমরা এমনিতেই নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দিয়ে দিন কাটান। এই মহামারীর পরিস্থিতিতে তা আরওই জটিল হয়ে উঠেছে। আমার মতো সমস্ত দৃষ্টিহীনদের আমি অনুরোধ করব, তাঁরা যেন বাড়ির বাইরে না যান। আমাদের এছাড়া কিছু করার নেই। একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে, শুধুমাত্র এটুকুই প্রার্থনা করতে পারি।'