লকডাউন: জলের সমস্যা মেটাতে আস্ত একটা কুয়ো খুঁড়লেন দম্পতি

মুম্বই:  কথায় আছে ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়৷ এই প্রবাদ বাক্যটি সত্যি করে দেখালেন মহারাষ্ট্রের এক দম্পতি৷  লকডাউনে ঘরে বসে কেউ মজেছেন অনলাইন অন্তাক্ষরী গেমে, কেউ বা ব্যস্ত গাছ লাগাতে৷ অনেকে আবার ট্রাই করে চলেছেন নতুন নতুন রেসিপি৷ কিন্তু এই অবসরকে কাজে লাগিয়ে আস্ত একখানি কুয়ো খুঁড়ে ফেললেন মহারাষ্ট্রের এক দম্পতি৷ 

শুনতে অবাক লাগলেও, একবারে সত্যি৷ লকডাউন শুরু হওয়ার পর ২১ দিনের মধ্যেই বাড়ির সামনে ২৫ ফুট গভীর একটি কুয়ো খনন করে ফেললেন গজানন পাকমোড়ে এবং তাঁর স্ত্রী পুষ্পা৷ মহারাষ্ট্রের ওয়াসিম জেলার কারখেদা গ্রামের বাসিন্দা গজানন বলেন, ‘‘মাটি খুঁড়তে খুঁড়তে ২১ তম দিনে আমরা মাটির নীচে জলের খোঁজ পাই৷ সেই সময় আমাদের আনন্দের কোনও সীমা-পরিসীমা ছিল না৷’’ গজানন পেশায় রাজমিস্ত্রি৷ ফলে কূপ খুঁড়তে নিজের পেশাগত দক্ষতাকে কাজে লাগান তিনি৷ এই কাজে তাঁর পাশে দাঁড়ান স্ত্রী পুষ্পা৷ উৎসাহ যোগায় তাঁদের দুই সন্তান৷ 

গজানন বলেন, লকডাউন শুরু হওয়ার পর জেলা প্রশাসন যখন আমাদের ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়, তখনই সিদ্ধান্ত নিই এই সময়কে কাজে লাগাতে হবে৷ কিছু একটা করতে হবে আমাদের৷ এর পরই আমরা দু’জনে আলোচনা করে কুয়ো খনন করার সিদ্ধান্ত নিই৷ স্ত্রীকে বলি বাড়ির সামনে পুজোর ব্যবস্থা করতে৷ পুজো করে শুরু করি মাটি কাটা৷’’ এই কাজে কোনও যন্ত্র ব্যবহার করেননি ওই দম্পতি৷ কুড়ুল-কোদাল দিয়েই চলে খনন কাজ৷ প্রথম প্রথম প্রতিবেশীদের কাছে হাসির পাত্র হয়ে উঠেছেলেন তাঁরা৷ কিন্তু হাল ছাড়েননি৷ ২১ দিন ধরে চলে সংগ্রাম৷ ২৫ ফুট গভীরে গিয়ে দেখা মেলে জলের৷ এলাকায় জল পরিষেবায় বেশ সমস্যা রয়েছে৷  অধিকাংশ সময়েই জল পাওয়া যায় না৷ গজানন বলেন, ভাবলাম শুকনো কলের দিকে হাপিত্যেশ করে বসে থাকার চেয়ে কুয়ো তৈরি করাই শ্রেয়৷ ‘‘আমরা এই কাজ করতে পেরেছি৷ জলের সমস্যা থেকে এবার পাকাপাকি মুক্তি পাব আমরা৷ উপকৃত হবেন এলাকার বাসিন্দারাও৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine − three =