নতুন দিল্লি: বাংলায় আগামী বিধানসভা নির্বাচন যুদ্ধের দামামা বেজে গেছে। শাসক দল তৃণমূল যেমন নিজের মতো করে ঘুঁটি সাজাচ্ছে, তেমন পিছিয়ে নেই বিজেপিও। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ৪২টার মধ্যে ১৮টি আসন দখল করার পর এমনিতেই মনোবল বেড়ে গেছে তাদের। এদিন বঙ্গ বিজেপি ব্রিগেডকে আরও চাঙ্গা করতে ভার্চুয়াল সভায় ভাষণ দিলেন গেরুয়া শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। ভাষণে যেমন বাংলার বিজেপি নেতাদের সাম্প্রতিক কার্যকলাপের প্রশংসা ছিল তেমনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের জন্য ছিল তুমুল বিষোদ্গার।
নাড্ডা প্রথমেই বলেন, ৫ আগস্ট রাম মন্দিরে ভূমি পুজো হোওয়ার দিনে ইচ্ছাকৃত ভাবে বাংলায় লকডাউন ঘোষণা করেছিলেন মমতা। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আসলে হিন্দু-বিরোধী রাজনীতি করে ক্ষমতায় থাকতে চাইছেন বলে অভিযোগ বিজেপি সভাপতির। সেই সঙ্গে এও জানিয়ে দেন, আর বেশিদিন নয়, খুব শীঘ্রই বাংলার মানুষ তৃণমূলকে রাজ্য থেকে উৎখাত করে দেবে। নাড্ডা এও বলেন, নরেন্দ্র মোদীর আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু হয়েছে তিন বছর হল। এই প্রকল্পে, রিক্সাচালক, কাগজকুড়ানিদের মতো নিম্নবর্গের মানুষের জন্য বছরে পাঁচ লক্ষ টাকার বিমার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু মমতা বাংলার নিম্নবর্গের মানুষদের এই সুবিধা পাওয়া থেকে বঞ্চিত রেখেছেন। বঞ্চিতের সংখ্যা চার কোটি ৫৭ লক্ষ বলেও জানালেন নাড্ডা।
বঙ্গ বিজেপির নেতাদের সভাপতির পরামর্শ এই যে, আগামী নির্বাচনী প্রচারে এই বিষয়টি অবশ্যই মানুষের সামনে তুলে ধরা দরকার। যে সুবিধা মোদী দেশের জনগণের জন্য দিচ্ছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা আটকে দিচ্ছেন। কিষান সম্মান নিধির বিষয়েও দুর্নীতি করেছে মমতার সরকার বলে অভিযোগ নাড্ডার। তিনি জানান, তাঁরা বার বার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে জিজ্ঞাসা করে গেছেন যে রাজ্যে কৃষকের সংখ্যা কত, কিন্তু কোনও জবাবই আসেনি। ফলে বাংলার কোটি কোটি কৃষক ছয় বারের কিস্তিতে মোট ১২ হাজার টাকা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হল। এতে লোকসান হল স্রেফ চাষিদেরই যার জন্য দায়ী সেই মমতাই, দাবি নাড্ডার।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনাকে বাংলার আবাস যোজন নাম দিয়ে চালাচ্ছেন মমতা। সড়ক যোজনার ক্ষেত্রেও একই কীর্তি চলছে বলে অভিযোগ বিজেপি সভাপতির। তিনি বললেন, টাকা দিচ্ছে মোদী সরকার আর তাতে নিজের নাম ছেপে কৃতিত্ব নিচ্ছেন মমতা। তিনি দাবি করেন, এই ঘটনা আমরা বাংলার জনগণকে জানাবই, যে আমরা কতটা বাংলার সেবা করেছি, আর তার কৃতিত্ব নিয়েছে বাংলার রাজ্য সরকার। বিরোধীদের কোনও কথাই শোনেন না মমতা, অভিযোগ নাড্ডার। একেবারে বাংলা হিন্দি মিশিয়ে বললেন, মমতা শুধু বলেন, ‘হবে না, হবে না, হবে না। কী হবে না? সবকুছ হবে।’ তৃণমূলের ‘রেশন-চুরি’র বিষয়টিও অনিবার্য ভাবে তুলে ধরেন তিনি। সংক্রমণের পরিসংখ্যান না জানানো, দিল্লির টিমকে কাজ করতে না দেওয়া এসবই চলছে বাংলায় বলে অভিযোগ নাড্ডার।