নয়াদিল্লি: চোখ রাঙাচ্ছে করোনা৷ লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা৷ এখনও পর্যন্ত ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬৬৬ জন৷ সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ২৯১ জন৷ ১০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ করোনা রুখতে ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী৷ লকডাউনের জেরে মুখ থুবড়ে পড়েছে ভারতীয় শেয়ারবাজার৷ ধুঁকছে অর্থনীতি৷ আর এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সাংসদ, মন্ত্রীদের বেতন কমানোর পথে হাঁটল কেন্দ্র৷ স্বেচ্ছায় নিজের বেতন থেকে ৩০ শতাংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও রাজ্যপালদের৷
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবার এক বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যপালরা, মন্ত্রী, সংসদরা স্বেচ্ছায় নিজেদের ৩০ শতাংশ বেতন না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ বেতন থেকে ৩০ শতাংশ অর্থ করোনা মোকাবিলায় খরচ করা হবে৷ একই সঙ্গে সংসদ তহবিল থেকে দু'বছরের টাকা খরচ হবে না মোকাবিলার জন্য৷ ৩০ শতাংশ বেতন কাটছাঁট ও দু’বছরের সাংসদ তহবিল থেকে ২ বছরে ৭ হাজার ৯০০ কোটি সরকারি রাজকোষে জমা পড়বে বলে খবর৷ আজ সাংবাদিক বৈঠক করে এমন ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর৷
আজ কেন্দ্রীয়মন্ত্রী জাভড়েকর বলেন, ‘‘আজ মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সাংসদদের ৩০% বেতন এক বছরের জন্য কেটে নেওয়া হবে৷ সমস্ত সাংসদরা ৩০% বেতন নেবেন না৷ এই ৩০ শতাংশ বেতন মোকাবিলার জন্য কাজে লাগানো হবে৷ এই মর্মে অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়েছে৷ অর্ডিন্যান্সের ভিত্তিতে আজ থেকেই এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে৷ বিষয়টি ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে স্বাক্ষরের জন্য পাঠানো হয়েছে৷ সেখানে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্যরা ও সংসদরা নিজেদের ভেতর থেকে ৩০ শতাংশ ১ বছরের জন্য নেবেন না৷ সমাজের প্রতি আমাদের কর্তব্য পালনের ভাবনা থেকেই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে৷ সর্বসম্মতিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে৷’’ মন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘আমরা ভীষণ খুশি, দেশ দেশের রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, সমস্ত রাজ্যের রাজ্যপালরা স্বেচ্ছায় তাঁদের বেতন থেকে ৩০ শতাংশ না নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন৷’’
এখন ভারতের রাষ্ট্রপতির মাসিক বেতন ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা৷ ভারতে প্রধানমন্ত্রীর বেতন মাসে ১ লাখ ৪৯ হাজার টাকা৷ উপরাষ্ট্রপতির বেতন ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা৷ রাজ্যপালদের ১ লাখ ১০ হাজার টাকা৷ একজন সাংসদের মাসিক বেতন ৫০ হাজার টাকা৷ নির্বাচনী কেন্দ্রে ভাতা দেওয়া হয় ৪৫ হাজার টাকা৷ অফিসের জন্য ভাতা দেওয়া হয় ১০ হাজার টাকা৷ অফিসে আসার জন্য প্রতিদিন ২ হাজার টাকা করেও দেওয়া হয়৷ বিনামূল্য ৫০ হাজার ইউনিট বিদ্যুত্ পেয়ে থাকেন সাংসদরা৷ ঘরভাড়া ছাড়া থাকার ব্যবস্থা থাকে৷ দেড় লক্ষ ফ্রি ফোন কলের সুবিধা পান সাংসদরা৷ সারা ভারতে ৩৪টা বিজনেস ক্লাবে বিমান ভ্রমণের বিনাখরচে টিকিটও পান দেশের নেতারা৷ দেশের যে কোনও জায়গায় এসি ট্রেনে যাতায়াত করার সুবিধাও মেলে৷ সাংসদদের বেতন ও ভাতা বাবদ গত পাঁচ আর্থিক বছরে সরকারের ১,৯৯৭ কোটি টাকা খরচ হয়েছে৷