নয়াদিল্লি: কোভিড-১৯ রুখতে সারা দেশে ৩১ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে লকডাউনের সময়সীমা৷ কিন্তু চতুর্থ দফার এই লকডাউনে বদলেছে অনেক নিয়ম-কানুন৷ একাধিক শহরজুড়ে অনেকটাই স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে মানুষের জীবন৷ কিন্তু লকডাউনের বাঁধন আলগা হতেই চোখ রাঙাতে শুরু করেছে করোনা৷ ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ৷ এক লক্ষ ছাপিয়ে গিয়েছে আক্রান্তের সংখ্যা৷ কোন পথে এগোচ্ছে ভারত?
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী মঙ্গলবার পর্যন্ত ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১,০১,১৩৯৷ মৃত্যু হয়েছে ৩,১৮৩ জনের৷ সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩৯,১৩৭ জন৷ তবে সংবাদসংস্থা পিটিআই-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে কোরনা আক্রান্তের সংখ্যা ১,০১, ৬৮৮৷ আবার covid19india.org-র হিসাবে সংখ্যাটা ১,০২,৩২৯৷
একাধিক রাজ্যে চালু হয়ে গিয়েছে সরকারি ও বেসরকারি পরিবহণ ব্যবস্থা৷ খুলেছে দোকানপাট৷ ৫৭ দিন ঘরে বন্দি থাকার পর ফের দফতরের পথে পা বাড়িয়েছে মানুষ৷ এমনকী লকডাউনের শিথিলতায় পাড়ার পার্কেও শুরু হয়েছে মর্নিং ওয়াক৷ ফের কাজে যোগ দিয়েছেন বাড়ির পরিচারিকারা৷ আগের মতোই জোড়কদমে চলছে নির্মাণ কাজ৷ বাড়ছে অনলাইন অর্ডার৷ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের পাশাপাশি সাধারণ ব্যবহার্য জিনিস পৌঁছে দিতে তৎপর ই-কমার্সগুলি৷ রাজধানীতে মেট্রো পরিষেবা বন্ধ থাকলেও, গাড়িয়ে ছয়লাপ রাজপথ৷
অন্যদিকে, ভিন রাজ্য থেকে নিজেদের রাজ্যে ফিরতে শুরু করেছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা৷ এই ধাক্কায় রাজ্যগুলিতে চড়তে শুরু করেছে আক্রান্তের পারদ৷ উত্তর প্রদেশ, বিহার, ওডিশা এবং ঝাড়খণ্ডে একলাফে বহুগুণ বেড়ে গিয়ছে করোনা পজেটিভ-এর সংখ্যা৷ ইতিমধ্যে মঙ্গলবার রেল মন্ত্রী জানিয়েছেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরানোর জন্য আর সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের অনুমতির প্রয়োজন নেই৷ এর আগে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছিল, শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনগুলি চালানোর জন্য রাজ্যের অনুমতি লাগবে৷
গত আট সপ্তাহে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ছাপিয়ে গিয়েছে৷ সংক্রমণ বৃদ্ধির হার ৩ শতাংশ, অর্থাৎ ডবলিং রেট এখন ২৩ দিন৷ কোভিড-১৯ গ্রাফ ট্রেকিংয়ের দায়িত্বে থাকা শমিকা রবি বলেন, গত তিন দিনে এই হার বদলায়নি৷ পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে৷
এরই মধ্যে লকডাউনের শিথিলতা চিন্তা বাড়াচ্ছে৷ দোকানপাট খোলায় রাস্তায় ক্রমশ ভিড় বাড়তে শুরু করেছে৷ এই অবস্থায় মাস্ক বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার কতটা করোনা রুখতে সক্ষম হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷ মানুষ মাস্ক বা স্যানিটাইজার ব্যবহার করলেও, বাসে-ট্রেনে কতটা ,সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব তা নিয়েও সন্দেহ দানা বেঁধেছে৷ এই পরিস্থিতিতে সংক্রণের হার আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞ মহলের৷