আজ বিকেল: রোহিত ভেমুলার আত্মহননের পরেও যে দলিত দলন বন্ধ নেই তা ফের প্রমাণ করল পায়েল তাদভির ঘটনা। বছর ২৬-এর পায়েল সালমা তদভি, স্ত্রীরোগ বিদ্যায় পোস্টগ্রাজুয়েট হওয়ার পরও তাঁকে সহ্য করতে হল দলিত হওয়ার অপমান। নিচুজাত বলে দিনের পর দিন কথা শনানো, মানসিক অত্যাচার, বাথরুম থেকে এসে তাঁর হস্টেলের খাটে রুমমেটদের পা মোছা, কত কিছু। শনিবার তিনটি অস্ত্রপচারের পর বেশ শান্তভাবেই নিজের রুমে ফিরে এসে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন এই তরুণী চিকিৎসক।
জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ের বিওয়াইএল নায়ার হাসপাতালেই পড়াশোনার পাশাপাশি চিকিৎসা করছিলেন পায়েল। তিনি মহারাষ্ট্ররে ভিল আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত বলে বিভিন্ন সময় তাঁকে তাঁর সহকর্মীদের কাছে কথা শুনতে হয়েছে। উঠতে বসতে অপমান, হস্টেলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে খোঁচা কিছুই বাদ যায়নি। এই ঘটনায় হস্টেলে তাঁর তিন সিনিয়র ‘দিদি’ অঙ্কিতা খাণ্ডেলওয়াল, ভক্তি মাহেব ও হেমা আহুজার বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। মেয়েকে আত্মহননের পথ বেছে নিতে বাধ্য করার অভিযোগে এই তিনজনের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন মৃত চিকিৎসকের অভিভাবকরা। পায়েলের মা আবেদা তাদভি বলেন, মেয়ের আমার খুব মনের জোর। হস্টেলে ভর্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তার সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটতে শুরু করে। এই তিনজন নানা ছুতো নাতায় তাকে অপমান ও হেনস্তা করে। বাড়িতেও বিষয়টি জানিয়েছিল পায়েল। আবেদা তাদভি নিজে এনিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অভিয়োগ জানিয়ে চিঠি দেন। তবে সেই চিঠি পেয়েও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পায়েলের স্বামী সলমন তাদভি জানিয়েছেন, অত্যাচার সইতে না পেরেই তাঁর স্ত্রী এমন একটি সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। তবে যাদের জন্য পায়েলের আজ এই পরিণতি, তাঁদের কোনওভাবেই ক্ষমা করা হবে না। অভিযুক্তদের শাস্তি দিতে যতটা পর্যন্ত যাওয়ার ততটাই যাবেন।
এদিকে পুলিশ তদন্তে নেমে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে। তিনজনকেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যদিও বিষয়টি যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল তা অস্বীকার করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, পায়েল মৌখিকভাবে হেনস্তার খবর জানালেও কোনও লিখিত অভিযোগ কর্তৃপক্ষকে জমা করেননি।