দেবময় ঘোষ: রাজীব গান্ধী তনয়া, প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর টুইট পড়ে অনেক বামপন্থী বিভ্রান্ত। কংগ্রেস ধর্ম নিরপেক্ষ রাজনৈতিক দল – তা আর অনেকেই ভাবতে পারছেন না। কিন্তু, ভারতের মত ধার্মিক গণতান্ত্রিক দেশে মানুষের আবেগকে ছুঁতে হলে ধর্মকে গুরুত্ব দিতেই হবে। উপায় নেই। সিপিএম পলিটব্যুরো বলছে, পার্টি সব সময় বলেছে, দুই পক্ষের গ্রহণযোগ্য মতামতের ভিত্তিতে সমস্যার সমাধান হোক। নতুবা, আদালতের রায়ের মাধ্যমে তা হোক। সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে। যা মন্দির নির্মাণের পথ সুগম করেছে।
অযোধ্যায় রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন নিয়ে, মোদী বা বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো চুপ। কেউ বেসুর মন্তব্য করেনি। প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর বক্তব্য থেকে শুরু করা যাক। তাঁর বার্তা, রামলালার ভূমিপূজা সারা দেশের জন্য একতা'র উৎসব। শেষে উনি বলেছেন, জয় সিয়া রাম। এখানে মনে রাখতে হবে, 'জয় সিয়া রাম' বলার প্রথা অতি প্রাচীন। বিজেপি নেতারা সাধারণত, জয় শ্রী রাম ধ্বনি উচ্চারণ করেই অভস্থ। মুলায়ম সিং যাদব, অখিলেশ যাদব, মায়াবতী, উদ্ভব ঠকরে, শরদ পাওয়ার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় – কেউ ভূমি পুজোর বিরোধিতা করেননি। একমাত্র আসাদুদ্দিন আওয়েসি ছাড়া কেউ সরাসরি ভূমি পূজার বিরোধিতা করেননি।
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী এবং সিপিএম নেতা মানব মুখোপাধ্যায় বলেছেন, “আজ আবার প্রমান হল , ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে জাতীয় কংগ্রেসের অবস্খান সুবিধাবাদী অবস্খান ।সব ধর্মকে উৎসাহ দেওয়া কোন রাজনৈতিক দলের কাজ না। রাজনৈতিক দল কোন ধর্মকে আলাদা করে উৎসাহ দেবে না। এটাই প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষতা।” মানববাবু, বাম জমারার মন্ত্রী। বাংলার বামফ্রন্ট religious sentiment কে পাত্তা দিত, তা নয়। কিন্তু, মাথায় চেপে বসতে দেয়নি। বশ্যতা স্বীকার করেনি। যদি করত, তাহলে হয়ত ৫ বার লকডাউনের দিন পরিবর্তন করার মত ঘটনা ঘটতে দেখা যেত। আমার ব্যক্তিগত মতামত, religious sentiment কে কখনই অস্বীকার করেনি ফ্রন্ট। কিন্তু, ভোট পকেটে নেওয়ার জন্য অন্যায় আপোষ করা হয়নি। মানুষ বৃহত্তর স্বার্থেই ভোট দিয়েছে। বামফ্রন্টের পতনের কারণে কোনও ধর্মীয় দিক ছিল না। তবে, বিগত ১০ বছরে, বাংলার রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা মূলক সাম্প্রদায়িকতা চলছে। আম জনতার (তার মধ্যে আমিও) রাজনৈতিক বোধ নিম্মগামী।
তবে, সিপিএম এক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে মেনে নিয়েছে। মানববাবুও পরে বলেছেন, “আজকের পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের সাথে জোট করেই আমাদের এগোতে হবে।” পার্টির পলিটব্যুরো বলেছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী মন্দির ট্রাস্ট বানাবে। সেখানে উত্তরপ্রদেশ সরকার, প্রধানমন্ত্রী সারাদিন কী করলেন?