নতুন দিল্লি: বিতর্কের সূত্রপাত কপিল সিব্বল, গুলাম নবি আজাদের মতো বেশ কিছু কংগ্রেস নেতা ও ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যদের একটি চিঠিকে কেন্দ্র করে। চিঠিতে নাকি দাবি করা হয়, দলে নির্বাচনের মাধ্যমে পূর্ণ সময়ের সভাপতি নির্বাচন করা হোক। পাশাপাশি দলের খোলনলচে বদলে ফেলারও দাবি জানানো হয়। এই ঘটনা নিয়েই এদিন সকাল থেকেই সরগরম ছিল কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক। বিগত কয়েক বছরে কংগ্রেস হাই কম্যান্ডের এমন হাইভোল্টেজ বৈঠক সম্ভবত দেখা যায়নি।
সোমবার বৈঠক শুরুর আগের থেকেই নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। এমনকী, কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী ইস্তফা দিচ্ছেন, রটে যায় এমন খবরও। যদিও খানিকটা আগের বারের মতোই আবারও ছ’ মাসের জন্য অন্তবর্তীকালীন সভানেত্রী রাখা হল সেই সনিয়া গান্ধীকেই।
সোমবার বৈঠকের শুরুতেই সুর পাল্টে যায়। ‘ম্যাডাম’ সনিয়া গান্ধীর ভূয়সী প্রশংসা করে বসেন নেতারা। চিঠির প্রেরকরা বিজেপির সঙ্গে ষড়যন্ত্র করছেন বলেও দিনভর বিতর্ক দানা বাঁধে। চিঠির সময় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাহুল গান্ধী। পরে ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য এবং দলের অন্যতম নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘রাহুল গান্ধী কখনই বলেননি যে ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য বা তার বাইরে কেউ, বিজেপির সঙ্গে ষড়ষন্ত্র করে সনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখেছেন।’ দলের এই গুঞ্জনের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে আজাদ বলেন, বিজেপির সঙ্গে ষড়যন্ত্র প্রমাণিত হলে দল ছেড়ে দেবেন তিনি।
অন্য দিকে সনিয়া গান্ধীর পদত্যাগের জল্পনায় বিচলিত হয়ে পড়েন অনেক নেতা। কর্নাটকের সিদ্ধারামাইয়া থেকে শুরু করে ঝাড়খণ্ডের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডঃ রামেশ্বর ওঁরাও সনিয়াকে ইস্তফা না দেওয়ার অনুরোধ করেন। সিদ্ধারামাইয়ার বার্তা, যদি আপনি শারিরীকভাবে কাজ চালিয়ে যেতে না পারেন. তাহলে রাহুল গান্ধীকে রাজি করানো হোক।’.
দিনভর জল্পনা, বিতর্ক, সওয়াল জবাবে, সাত ঘণ্টা পর শেষ হয় কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক। তারপর কংগ্রেস নেতৃত্বের তরফে জানানো হয়, অন্তবর্তীকালীন সভানেত্রী থাকছেন সনিয়াই। দলের নেতা কেএইচ মুনিয়াপ্পা বলেন, ‘ম্যাডামই কাজ চালিয়ে যাবেন এবং সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব স্থায়ী সভাপতি নির্বাচনে দলের অভ্যন্তরীণ নির্বাচন হবে।’ দলের নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করতে দ্রুত এআইসিসি অধিবেশন ডাকার প্রস্তাব দেন পি চিদম্বরম। আর এক কং নেতা পিএল পুনিয়া জানান ‘সনিয়া গান্ধীজি বলেছেন, সবাই একটি পরিবার এবং সবাইকে একসঙ্গে দলকে মজবুত করে তুলতে হবে।’