লখনউ ও পাটনা: তাঁর আমলে উত্তরপ্রদেশ কতটা নিরাপদ, তার ঢাক পেটাতে গিয়ে আবার বিতর্ক উসকে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ৷ সোমবার লখনউয়ে বিজেপির সদর দপ্তরে দলীয় কর্মিসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের সুরক্ষার প্রশ্নে ষাঁড়, মোষ ও মহিলাদের এক বন্ধনীতে এনে ফেললেন যোগী৷ কর্মিসভায় যোগী মন্তব্য করেন, তাঁর আমলে উত্তরপ্রদেশ নিরাপদে রয়েছে৷ তিনি ক্ষমতায় আসার আগে এই রাজ্য নিরাপদে ছিল না৷ যে কোনও সময় রাস্তা থেকে মোষ, ষাঁড়, মহিলাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হত৷ এখন আর এই সব হয় না৷ এখন সকলেই নিরাপদে রয়েছেন৷
তিনি বলেন, দলের কর্মীরা যখন অন্য কোথাও যেতেন, তখন পরিবারের মহিলারা প্রশ্ন করতেন তাঁরা কি নিরাপদ? মেয়ে-বোনেরা নিরাপত্তার অভাবে ভুগতেন৷ রাস্তা দিয়ে কোনও গোরুর গাড়িও নিরাপদে যেতে পারত না৷ যোগীর মতে, এই ধরনের সমস্যা অতীতে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে দেখা দিলেও, বর্তমানে অবস্থা বদলে গিয়েছে। আগের জমানার সঙ্গে তুলনা টেনে তাঁর প্রশ্ন, এখন কি আর কেউ জোর করে ষাঁড়, মোষ, মহিলাদের তুলে নিয়ে যেতে পারে? এখন কি এই পরিবর্তন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না? আগে রাতে মানুষ রাস্তায় বেরোতে ভয় পেলেও, এখন সেই পরিস্থিতি পালটে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। ‘আব্বাজান’ মন্তব্য ঘিরে জলঘোলা থামার আগেই নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী৷
এরই মধ্যে যোগীর বিরুদ্ধে পিটিশন দায়ের হয়েছে নীতীশ কুমারের রাজ্যের আদালতে৷ যোগীর বিতর্কিত ‘আব্বাজান’ মন্তব্যে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের অপমান করা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে বিহারের মজফফরপুরে মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে পিটিশন দাখিল করেছেন স্থানীয় সমাজকর্মী তামান্না হাসমি৷ গত রবিবার উত্তরপ্রদেশের কুশীনগরে এক সভায় যোগী মন্তব্য করেন, তিনি ২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসার পরই রাজ্যের গণবন্টন ব্যবস্থা কার্যকর হয়েছে৷ নইলে তার আগে গরিবদের জন্য বরাদ্দ খাদ্য তারাই কবজা করে নিত, যারা বলে ‘আব্বাজান’৷ আগে কুশীনগরের রেশন নেপাল-বাংলাদেশে পাচার হলেও, এখন যারা গরিবের খাবার লুঠ করে, তাদের জেলে ঠাঁই হয়৷ যোগীর ‘আব্বাজান’ মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে হাসমি আদালতে আবেদন করেছেন, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার দায়ে ভারতীয় দণ্ডবিধির নির্দিষ্ট ধারায় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর বিচার করা হোক৷ উল্লেখ্য, যোগীর বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্যের মাধ্যমে ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টার অভিযোগ আনা এই হাসমি অতীতে আরও অনেক রাজনীতিকের বিরুদ্ধে আইনের দরজায় কড়া নেড়েছেন৷