জয়পুর: প্রায় এক মাস ধরে টান টান উত্তেজনার পর কংগ্রেস শিবিরে আজ মধুরেণ সমাপয়েৎ৷ বিদ্রোহী শচীন পাইলটের প্রত্যাবর্তনে বিধানসভা অধিবেশনে আস্থা ভোটে জয়ী অশোক গেহলট সরকার৷ ধ্বনি ভোটে আস্থা-জয়ের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা আজ ঐক্যবদ্ধ ভাবে বিজেপির চক্রান্ত ব্যর্থ করে দিয়েছি।’’
আরও পড়ুন- করোনা-মুক্ত অমিত শাহ, কিছুদিন পর ফের কাজে ফিরবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
এদিন রাজস্থান বিধানসভায় বিজেপি যে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে চলেছে, সেই ইঙ্গিত আগেই ছিল৷ অধিবেশন শুরু হতেই হই-হট্টোগোল শুরু করে দেন বিজেপি বিধায়করা৷ শুরু হয় কাগজ ছোড়াছুড়ি, স্লোগান৷ এই শোরগোলের মধ্যেই আস্থা ভোটে জিতে আসন পাকা করেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট৷
এদিন আস্থা প্রস্তাবের ওপর প্রায় তিন ঘন্টার আলোচনার পর সরকার ধ্বনি ভোটে জয়ী হয়। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের সঙ্গে সমস্যার জেরে ১৮ জন বিদ্রোহী বিধায়ককে নিয়ে জয়পুর ছেড়ে দিল্লি চলে যান শচীন পাইলট৷ এরপরই উপমুখ্যমন্ত্রী ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে সরানো হয় তাঁকে৷ তবে হাইকমান্ডের হস্তক্ষেপে পাইলটের ‘ঘর ওয়াপাসি’র পরেই মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল আস্থা ভোটের ফলাফল৷ এদিন বিরোধীদের বহু চেষ্টা সত্ত্বেও আস্থাভোটে মসৃণভাবেই জয়ী হয় কংগ্রেস৷ ২০০ আসনের মধ্যে রাজস্থান বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য ১০১ বিধায়কের সমর্থন প্রয়োজন ছিল। তার চেয়ে বেশি ভোট পেয়েই জয়ী হয় কংগ্রেস শিবির।
আরও পড়ুন- রাশিয়ার করোনা ভ্যাকসি ‘স্পুটনিকে’র গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন হু’র
এদিন রাজস্থানের আইন ও পরিষদীয় মন্ত্রী শান্তি কুমার ধারিওয়াল বিধানসভায় আস্থা ভোটের প্রস্তাব পেশ করেন। অধ্যক্ষ সিপি জোশী আস্থা ভোট নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব গ্রহণ করেন৷ এই বিষয়ে তর্ক-বিতর্কের জন্য তিন ঘন্টা সময় ধার্য কার হয়৷ আলোচনা শুরু হতেই বিজেপি’র বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান ধারিওয়াল৷
বিজেপি, কংগ্রেস বিধায়কদের কিনে রাজ্য রাজনীতির মোড় বদলের চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি৷ নাম না করে গজেন্দ্র শেখাওয়াতকেও একহাত নেন ধারিওয়াল৷ তাঁর অভিযোগ, মধ্যপ্রদেশ, মণিপুর এবং গোয়ার মতো রাজস্থানেও অর্থ আর ক্ষমতা প্রয়োগ করে সরকার ফেলার চেষ্টা করেছিল বিজেপি৷ কিন্তু এ রাজ্যে তাঁদের সেই অভিসন্ধি ব্যর্থ হয়েছে৷ তিনি আরও বলেন, ‘‘মহারানা প্রতাপ বহিরাগত হামলাকারীকে প্রতিরোধ করেছিলেন। তেমন ভাবেই মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট বহিরাগত চক্রান্তকারীকে রুখে রাজস্থানকে রক্ষা করলেন।’’
আরও পড়ুন- বাড়ি বাড়ি ঘুরে কাজ করেও নেই নিরাপত্তা, স্থায়ীকরণের দাবিতে পথে গ্রামীণ সম্পদ কর্মীরা
পাল্টা জবাবে বিরোধী দলনেতা রাজেন্দ্র রাঠৌর বলেছেন, গত একমাস ধরে কংগ্রেসি নাটকের সাক্ষী থেকেছে রাজ্যের মানুষ। অভিনেতা, নায়ক, খলনায়ক সবাই ছিল একটি দলেই। কংগ্রেসের এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের মাশুল গুণতে হয়েছে রাজ্যের মানুষকে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই স্বীকার করেছেন যে, প্রায় দেড় বছর তিনি উপমুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেননি। এভাবে সরকারের কাজ মসৃণ গতিতে চলতে পারে না৷