নয়াদিল্লি: লোকসভায় পাশ হল নাগরিকত্ব বিল ২০১৯৷ বুধবার রাজ্যসভায় পেশ হবে এই বিল৷ বিল নিয়ে আলোচনা শুরুতেই প্রতিবাদে নামে কংগ্রেস-তৃণমূল ও বামেরা৷ সাংসদ থেকে ওয়াকআউট করে কংগ্রেস৷ পরে ধ্বনি ভোটে লোকসভায় পাশ হয়ে যায় বিলটি৷
মঙ্গলবার সংসদ শুরুর আগেই নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতায় হাতে লাঠি নিয়ে অভিনব প্রতিবাদে সামিল হন তৃণমূল৷ মোদির মুখোশ পরে প্রতিবাদ করেন তাঁরা৷ সংসদে বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হতেই স্লোগান তুলতে থাকেন তৃণমূল সাংসদরা৷ তৃণমূল সাংসদের দাবি, এই বিলটি বিভাজনের উদ্দেশ্যে সরকার আনতে চাইছে৷ বাঙালি খেদাওয়ের পরিকল্পনা করেছে মোদি সরকার৷ তাই বিলটি প্রত্যাহার করার দাবি সহ প্রতিবাদ করেন তৃণমূল সাংসদরা৷ এদিন সংসদ চত্বরে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধর্ণা দেখান তাঁরা৷ একইসঙ্গে বিলটি লোকসভায় পেশ করার সময়ই হল্লা করেন৷ নাগরিকত্ব বিল নিয়ে প্রতিবাদের করে কংগ্রেস, এসপি, আরজেডি, আপ সহ অন্য বিরোধী দলগুলিও৷ এদিন বিলের বিরোধিতায় বিজেপির বিরুদ্ধে কড়াভাষায় আক্রমণ করেন সাংসদ মহম্মদ সেলিম৷ কিন্তু, বিরোধীদের প্রবল আপত্তি থাকলেও তা আজ কাজে আসেনি৷
সরকারের নাগরিকত্ব (সংশোধন) বিল অনুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের হিন্দু, পার্সি, শিখ, জৈন এবং খ্রিষ্টান ধর্মালম্বী ‘শরণার্থী’দের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এই বিল আইনে রূপান্তরিত হলে বাংলাদেশি হিন্দুতে ভরে যাবে আসাম। আর এ জন্যই তারা এই বিলের বিরোধিতা করছে।
নাগরিকত্ব বিলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মায়ানমার ও শ্রীলঙ্কা থেকে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, পার্সি-সহ ওই সব দেশে সংখ্যালঘুরা যদি অত্যাচারের কারণে ভারতে আসেন তো তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে৷ অর্থাৎ, মুসলিম বাদ দিয়ে সকলেই নাগরিকত্ব পাবেন৷ ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলেছিল, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা ভারতে এলে থাকতে পারবেন৷ তাঁদের বিরুদ্ধে বিদেশি আইন অনুসারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না৷ কিন্তু বাংলাদেশের উদ্বাস্তু, যাঁদের কাছে বৈধ নথি নেই, তাঁরা তো অনুপ্রবেশকারী হিসাবেই চিহ্নিত হবেন৷ তাই তাঁদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া উচিত৷ আপত্তি উঠেছে, এভাবে ধর্মীয় ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়াটা সংবিধান-বিরোধী, তাই আদতে তা আদালতে খারিজ হয়ে যাবে৷ কিন্তু যুক্তি হল তাঁরা ধর্মীয় অত্যাচারে এখানে আসতে বাধ্য হচ্ছেন৷ তাই তাঁদের নাগরিকত্ব দিলে সংবিধান-ভঙ্গ করা হচ্ছে না৷ কমিটি বলেছে, অসম চুক্তির প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল, অসমের সাংস্কৃতিক, সামাজিক, ভাষাগত পরিচয় রক্ষা করা৷ এটা সরকারের দায়িত্ব৷ অনুপ্রবেশকারীরা যাতে আসতে না পারে, তার জন্য সীমান্তে উপযুক্ত বেড়া দিতে হবে এবং সজাগ প্রহরার ব্যবস্থা করতে হবে৷ এনসিআর-এর চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুতির সময়ও কড়া নজর রাখার কথা বলেছে কমিটি৷
The Citizenship Amendment Bill 2019 has been passed in Lok Sabha. pic.twitter.com/RMBMNcNlQZ
— ANI (@ANI) January 8, 2019