নয়াদিল্লি: ভারতে করোনা ভাইরাস সনাক্তকরণে ব্যবহৃত চিনা টেস্টিং কিটগুলি ত্রুটিপূর্ণ। পশ্চিমবঙ্গ সহ একাধিক রাজ্য থেকে পাওয়া এই অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দুদিনের জন্য ব়্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় ভারতের শীর্ষ চিকিৎসা গবেষণা সংস্থা ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ রিসার্চ। কিট গুলির মান পরীক্ষার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত সপ্তাহে, দুটি চিনা সংস্থা থেকে ৫.৫ লাখ ব়্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্টিং কিট কেনে ভারত এবং এগুলি করোন ভাইরাস সংক্রমণের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার হার নির্ধারণের জন্য কয়েকটি রাজ্যে বিতরণ করা হয়েছিল। চিনের
গুয়াংঝো ওয়ান্ডফো বায়োটেক ৩ লাখ এবং লিভজান ডায়াগনস্টিকস ২.৫ লাখ কিট সরবরাহ করেছিল।
টেস্টিং কিটে ত্রুটির অভিযোগ নাকচ করে এবার কিট গুলির মান পরীক্ষায় ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করল এই দুটি সংস্থা। চিনের লিভজন ডায়াগনস্টিকস এক বিবৃতিতে বলেছে: “আমাদের ব্র্যান্ড সহ চিনে তৈরি কোভিড-১৯ র্্যাপিড টেস্টিং কিটগুলি ত্রুটিপূর্ণ, ভারত থেকে পাওয়া নেতিবাচক এই রিপোর্টে আমরা হতবাক। আমরা এই ইস্যুতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছি, এবং আমরা তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারী বিভাগের সাথে সহযোগিতা করতে রাজি আছি৷”
সংস্থাটি বলেছে যে কিটগুলি চিন সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সমস্ত প্রয়োজনীয় মান উত্তীর্ণ করেছে এবং তারা ব্রাজিল, পেরু, কলম্বিয়া এবং বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ সহ কমপক্ষে ১০ টি দেশে এই কিট সরবরাহ করছে। লিভজন ডায়াগনস্টিকস আরও জানিয়েছে,”টেস্টিং কিটগুলি ২ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা উচিত এবং এর বেশী ঠান্ডায় রাখা উচিত নয় … স্টোরেজের তাপমাত্রা খুব বেশি হলে পরীক্ষার যথার্থতা প্রভাবিত হতে পারে৷”
অন্যদিকে, গুয়ানজহু ওয়ান্ডফো বায়োটেক তার এক বিবৃতিতে বলেছে যে তারা ৭০ টিরও বেশি দেশে কিট রফতানি করছে এবং পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির মাধ্যমে আইসিএমআর এই কিট গুলির বৈধতা যাচাই করে অনুমোদন করেছিল। “বিদেশের দেশগুলিতে পণ্য রফতানির প্রক্রিয়ায় ওন্ডফো আমাদের দেশের সংবেদনশীলতা এবং স্বাতন্ত্র্যতা সম্পর্কে বিভিন্ন যাচাইকরণের জন্য প্রতিটি দেশের প্রাসঙ্গিক স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সাথে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করে,” বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এখানকারর চিনা দূতাবাসের এক আধিকারিকের মাধ্যমে দুটি সংস্থার বিবৃতি গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। বর্তমানে, সরকারী হাসপাতালগুলি মানুষের গলা বা নাকের লালরস সংগ্রহ করে সেই নমুনা থেকে করোনভাইরাস সনাক্ত করতে পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) পরীক্ষাটি ব্যবহার করে আসছে। এই পরীক্ষায় ফলাফলগুলি জানতে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা সময় লাগে। ব়্যাপিড অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় সন্দেহজনক রোগীদের রক্তের নমুনাগুলি নেওয়া হয় এবং এরজন্য সাধারণত ১৫ থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগে। ক্রমবর্ধমান করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রেক্ষিতে ভারত টেস্টিং কিটের মারাত্মক ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে।