নয়াদিল্লি: পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে দু’দেশই৷ ৩ কিলোমিটারের বাফার জোন তৈরির প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু প্যাংগং লেকের চারটি ফিঙ্গার পয়েন্ট থেকে চিন এখনও সেনা প্রত্যাহার না করায় ফের উত্তেজনার পারদ চরছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায়৷ লাল ফৌজের আগ্রাসন রুখতে পূর্ব লাদাখ সীমান্তে ট্যাঙ্কের সংখ্যা বাড়াচ্ছে ভারতীয় সেনাবাহিনী৷
এই উত্তেজনার আবহেই আগামী ১৭ এবং ১৮ জুন লাদাখ এবং জম্মু-কাশ্মীর সফরে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং৷ অন্যদিকে, দিল্লি এসে পৌঁছেছেন নর্দান কমান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াইকে জোশি৷ খুব শীঘ্রই তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে এলএসি’র বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁদের অবহিত করবেন বলে মনে করা হচ্ছে৷
গতকালই ভারত-চিন কোর কমান্ডার স্তরের চতুর্থ দফার বৈঠক শেষ হয়েছে৷ টানা ১৪ ঘণ্টা ধরে চলে এই ম্যারাথন বৈঠক৷ ফিঙ্গার ফোর থেকে চিন তার সেনা প্রত্যাহার করবে না বলে ওই বৈঠকে স্পষ্ট করে দিয়েছে বলে সূত্রের খবর৷ প্রসঙ্গত, প্যাংগং লেকে মোট আটটি ফিঙ্গার পয়েন্ট রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, এই আটটি ফিঙ্গার পয়েন্টই রয়েছে ভারতের দখলে। অন্যদিকে ফিঙ্গার ৮ থেকে ফিঙ্গার-৪ পর্যন্ত এলাকার উপর দাবি জানিয়ে আসছে চিন৷ এই দাবির উপর ভিত্তি করেই গত প্রায় দু’দশকে ফিঙ্গার ফোর পর্যন্ত পাকা রাস্তা তৈরি করে ফেলেছে তারা। করেছে নির্মাণকাজও। এমনকী ফিঙ্গার-৪ থেকে ফিঙ্গার ৮ এ ভারতীয় সেনার টহলদারিতেও বারবার বাধা দিয়েছে চিনা ফৌজ। এই অঞ্চলে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে হামেশাই৷
গালওয়ান উপত্যকা, হটস্প্রিং এবং গোগরা থেকে দুই দেশ সেনা প্রত্যাহার করলেও ফিঙ্গার ফোর-এ কাঁটার মতো বিঁধে রয়েছে চিন৷ চিনা ফৌজের গতিবিধির উপর লক্ষ্য রেখে ভারতীয় বাহিনীতে হাই এ্যালার্ট জারি করা হয়েছে৷ আক্রমণ প্রতিহত করতে পূর্ব লাদাখ সীমান্তে মোতায়েন করা হয়েছে ৬০ হাজার সেনা৷ আনা হয়েছে ভীষ্ম ট্যাঙ্ক, অ্যাপাচি অ্যাটাক হেলিকপ্টার, সুখোই ফাইটার জেট, চিনুক এবং রুদ্র হেলিকপ্টার৷ এদিকে, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের নেতৃত্বাধীন চিন স্টাডি গ্রুপ (সিএসজি) কোর-কমান্ডার স্তরের ১৪ ঘণ্টার ম্যারাথম বৈঠকের আলোচ্য বিষয় খতিয়ে দেখছে৷ এই সিএসজি কমিটিতে রয়েছেন ক্যাবিনেট সেক্রেটারি, স্বরাষ্ট্র সচিব, বিদেশ সচিব এবং প্রতিরক্ষা সচিব৷ রয়েছে তিন সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিরাও৷