নয়াদিল্লি: সোমবার রাতে পূর্ব লাদাখের গালওয়ানে ভারত ও চিনা সেনার মধ্যে সংঘর্ষ বাধে৷ রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে মৃত্যু হয় ২০ জন ভারতীয় জওয়ানের৷ প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছিল, সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে ১৬ বিহার রেজিমেন্টের কর্নেল বি সন্তোষ বাবু, হাবিলদার কে পাঝানি ও কুন্দন ওঝার৷ পরে আরও এক বিবৃতিতে সেনার তরফে জানানো হয়, গুরুতর জখম অবস্থায় আরও ১৭ জন জওয়ান প্রবল ঠাণ্ডায় মারা গিয়েছেন৷
জানা গিয়েছে, গালওয়ান উপত্যকার পিপি ১৪-এ তে ভারতীয় সেনা ও চিনা ফৌজের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে৷ দুই পক্ষেই হতাহতের ঘটনা ঘটে৷ ওই দিন রাতে কমান্ডিং অফিসার এবং তাঁর এসকর্টবাহিনীর উপর লোহার রড নিয়ে হামলা চালায় চিনা সেনা৷ ভারতীয় সেনাদের লক্ষ্য করে পাথরও ছোড়া হয়৷ পাল্টা জবাব দেয় ভারত৷ চিনা সংবাদমাধ্যের রিপোর্টে প্রথমে বলা হয়েছিল, এই সংঘর্ষে পাঁচ চিনা সেনার মৃত্যু হয়েছে৷ জখম হয়েছেন ১১ জন৷ কিন্তু জানানো হয়,এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন চিনের ৪৩ জন সেনা৷ এই মুহূর্তে ভারত এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে রয়েছে৷ আমাদের হাতে একাধিক বিকল্প নেই৷ চিন যে খেলা শুরু করেছে, সেই খেলাতেই হারাতে হবে চিনকে৷ আরও আক্রমণাত্মক থাকতে হবে ভারতকে৷ ভারতকে ব্যাকফুটে ঠেলতেই গালওয়ানে এই কাজ করেছে চিনা ফৌজ৷ এই অঞ্চলের উপর মানসিক আধিপত্য বজায় রাখার কৌশল নিয়েছে বেজিং৷
প্রোপাগান্ডা বা প্রচার করার কাজে অত্যন্ত নিপুন চিন৷ এই একটি ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তোলার জন্য যথেষ্ট৷ মনে রাখতে হবে, সীমান্তে কিন্তু একটা গুলিও চলেনি৷ এবং এই বিষয়ে তাঁদের কাছে কোনও খবর নেই বলে জানিয়েছে চিনের বিদেশ মন্ত্রক৷ এর মানে কী হতে পারে? চিন এটা বোঝাতে চাইছে যে, তারা এমন কিছু করবে না যা যুদ্ধের প্ররোচণা দেবে৷ চিনের কথায়, তারা সংঘাত তৈরি করে না, করবেও না। পূর্ব লাদাখের এই অঞ্চলটি ভারতের কাছে আরও জটিল হয়ে উঠছে৷ সাম্প্রতিককালে প্রতিবেশি দেশগুলির সঙ্গে ভারতের কূটনীতি সম্পর্ক অনেকটাই ধাক্কা খেয়েছে৷ যা সীমান্ত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে৷ একদিকে, উচ্চ পদস্থ সেনা পর্যায়ে আলোচনা চলছে, অন্যদিকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চলছে সংঘর্ষ৷
সম্প্রতি নতুন মানচিত্র তৈরি করেছে নেপাল৷ যেখানে ভারতের একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিজেদের বলে দাবি করেছে তারা৷ গত শনিবার সে দেশের হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভের নিম্নকক্ষে সর্ব সম্মতিক্রমে পাশ হয়ে যায় নেপালের এই নয়া মানচিত্র৷ তাতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ভারতের লিম্পিয়াধুরা, কালাপানি ও লিপুলেখকে। চিন কী করে ভাবছে, তারা যখন খুশি ভারতে আসবে যাবে? ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢোকার সাহসই বা তারা পায় কী ভাবে? নেহরু-গান্ধী জমানার অহিংসা, ভুয়ো ভ্রাতৃত্ববোধকে সরিয়ে এবার সময় এসে গিয়েছে যোগ্য জবাব দেওয়ার৷ আমাদের কি এখনও শিক্ষা হয়নি? আমরা যদি খোলাখুলি হুমকির জবাব দিতে নাই পারি, তাহলে আমাদের বৃহত্তম সশস্ত্র বাহিনী কীসের জন্য রয়েছে৷