নয়াদিল্লি: ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতের মধ্যেই এবার ভুটানের ভূ-খণ্ডের উপর দাবি জানাল চিন৷ তাদের নিশানায় রয়েছে ভুটানের পূর্ব সীমান্ত৷ এই অঞ্চলের উপর চিনের দাবি ভারতের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ৷ কারণ এই সীমান্তেই রয়েছে অরুণাচলপ্রদেশ৷ ভারতের এই অঞ্চলের উপর বরাবর দাবি জানিয়ে এসেছে বেজিং৷ ফলে ভুটানের পূর্ব সীমান্তের উপর দাবি জানিয়ে চিন আদতে অরুণাচলকে পাখির চোখ করতে চাইছে কিনা, তার উপর নজর রাখছে নয়াদিল্লি৷
শনিবার চিনের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়, চিন-ভুটান সীমান্ত কোনও দিনই নির্দিষ্ট করা হয়নি৷ ভুটানের পূর্ব, মধ্য এবং পশ্চিম অংশ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই তাদের সঙ্গে বিবাদ রয়েছে৷ সেই সঙ্গে চিনের হুঁশিয়ারি, ভুটানের সঙ্গে তাদের সীমান্ত ইস্যুতে কোনও তৃতীয়পক্ষ যেন হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা না করে৷ নাম না করলেও, চিনের এই হুঁশিয়ারি যে নয়াদিল্লিকেই, তা একেবারেই স্পষ্ট৷
ভুটানের পূর্ব সেক্টরে অবস্থিত সাকতেং অভয়ারণ্যের জন্য অনুদান পেতে গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফেসিলিটির কাছে আবেদন জানিয়েছিল ফিম্পু৷ কিন্তু ভুটানের এই আবেদনে আপত্তি জানায় চিন৷ তাদের দাবি, এই অভয়ারণ্যটি বিতর্কিত এলাকায় অবস্থিত৷ এর উপর দাবি জানাতে পারে না ভুটান৷
চিন সুর চড়ালেও, ভুটানকে কিন্তু ওই অনুদান দেওয়া হয়েছে৷ ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, ভুটানের আবেদনে বাধা দিয়ে তাদের ভয় দেখানোর কৌশল নিতে চেয়েছিল চিন৷ সেইসঙ্গে ভূটানের পূর্ব সীমান্তের উপর নিজেদের দাবি স্পষ্ট করার এটা একটা পদক্ষেপ৷ তবে নয়াদিল্লিতে অবস্থিত চিনা দূতাবাসকে ভুটানের কড়া বার্তা, সাকতেং অভয়ারণ্য তাদের ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ৷ ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের জন্য চিন ভুটানকে চাপে ফেলতে চাইছে বলেও মনে করছে কূটনীতিবিদদের একাংশ৷
তবে, এর আগেও সীমান্ত সমস্যায় জড়িয়েছিল চিন-ভুটান৷ ২০১৭ সালে ভুটানের অন্তর্গত ডোকলামে ঢুকে পড়েছিল চিনা সেনা৷ সেখানে রাস্তা নির্মাণের চেষ্টাও শুরু করেছিল তারা৷ সেই সময় ভুটানের পাশে দাঁড়িয়ে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে ভারতীয় সেনাবাহিনী৷ টানা ৭২ দিন সংঘাতের পর অবশেষে স্থিতাবস্থা ফেরানো সম্ভব হয়৷ ়
১৯৮৪ সাল থেকে সীমান্ত সমস্যা মেটাতে দু’দেশের মধ্যে ২৪ রাউন্ড আলোচনা হয়েছে। কিন্তু ভুটানের সংসদ এবং ওই আলোচনার অন্যান্য রেকর্ড বলছে, মধ্য এবং পশ্চিম সেক্টর নিয়ে দু’দেশের মধ্যে মতবিরোধ থাকলেও, পূর্ব সেক্টর নিয়ে কোনও দিনই বিতর্ক ছিল না। এই বিতর্ক নতুন করে সৃষ্টি করেছে চিন৷ এই বিষয়ে ভারত এখনও কোনও মন্তব্য না করলেও, গোটা বিষয়ের উপর নজর রাখছে নয়াদিল্লি৷