চাঁদ এখন ভারতের! বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে দক্ষিণ মেরু ‘জয়’

চাঁদ এখন ভারতের! বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে দক্ষিণ মেরু ‘জয়’

chandrayaan 3

নয়াদিল্লি: চন্দ্রযান ৩ অভিযান সফল! বুধবার নির্ধারিত সময়ে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফল ল্যান্ডিং করেছে বিক্রম। আর সঙ্গে সঙ্গে ইতিহাস সৃষ্টি হয়ে গিয়েছে। চাঁদে সফল ভাবে মহাকাশযান অবতরণ করানো দেশের তালিকায় চতুর্থ স্থানে নাম লিখিয়ে নিয়েছে ভারত। এর আগে আছে আমেরিকা, রাশিয়া এবং চিন। তবে চাঁদের দক্ষিণ মেরু প্রথম আবিষ্কারের কৃতিত্ব ভারত একাই পাবে। কারণ এতদিন সেখানে কোনও দেশই মহাকাশযান অবতরণ করাতে পারেনি। ভারতের চন্দ্রযান ৩-এর সঙ্গে সরাসরি টক্করে ছিল রাশিয়া। কিন্তু সে দেশের লুনা-২৫ চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়েছে। 

১৪ জুলাই ঠিক দুপুর ২টো ৩৫ মিনিটে শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টারের লঞ্চিং প্যাড থেকে চাঁদের উদ্দেশে উড়ে গিয়েছিল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর চন্দ্রযান ৩। একে একে ৪০ দিন কাটিয়ে বুধবার, ২৩ আগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফল অবতরণ ঘটিয়ে ফেলেছে সে। সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে চাঁদের মাটি স্পর্শ করেছে ল্যান্ডার বিক্রম। আর ওই মুহূর্তেই ইতিহাস সৃষ্টি হয়ে গিয়েছে। ২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২-এর অসফলতার পর চাঁদের মাটি ছোঁয়ার স্বপ্ন কার্যত অনেকটা পিছিয়ে গিয়েছিল। সেই অভিযান সফল না হওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েন ইসরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান কে শিবন। কিন্তু দমে যাননি ইসরোর বিজ্ঞানীরা। ২০২৩ সালের চন্দ্রযান ৩ সব নিরাশা আনন্দে রূপান্তরিত করে দিয়েছে এক লহমায়। 

এই অভিযান নিয়ে প্রথম থেকে উৎসাহিত ছিল দেশবাসী। নিজের নজর এই মুন ল্যান্ডিংয়ের দিকে টিকিয়ে রেখেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চন্দ্রযান ২ অভিযানের সময় তিনি ইসরো কার্যালয়ে ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে তিনি ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছেন। তবে সেখান থেকেই এই অভিযানকে সফল হতে দেখেছেন মোদী। অবতরণের পর তিনি বলেন, এরকম ইতিহাস তৈরি দেখতে পারলে জীবন ধন্য হয়ে যায়। এরকম ঐতিহাসিক ঘটনা দেশের চিরদিনের চেতনা হয়ে থেকে যায়। এই মুহূর্ত অবিস্মরণীয়, অভূতপূর্ব এবং গর্বের। ইসরোর তরফ থেকে এই অভিযানের সাফল্য নিয়ে টুইটও করা হয়েছে। 

চন্দ্রযান-১ এবং চন্দ্রযান-২- এর মতোই চন্দ্রযান-৩ খুব ব্যয়বহুল অভিযান ছিল না। চন্দ্রযান-৩-এর বাজেট ছিল ৬১৫ কোটি টাকা। আমেরিকা বা রাশিয়া চাঁদের অভিযানে যে অর্থ খরচ করে, তার তুলনায় এই অর্থ অনেকটাই কম। তবে চাঁদে পৌঁছনোর জন্য যে তা যথেষ্ট তা প্রমাণ করে দিয়েছে ইসরো। যদিও এই রাস্তা একদমই সহজ ছিল না। একাধিক ধাপ পেরিয়ে, কক্ষপথ পালটে এই অভিযান সফল করেছে চন্দ্রযান ৩। চাঁদে পৌঁছতে পৌঁছতে গন্তব্যের একাধিক ছবি তুলে পাঠিয়েছে এটি। সবশেষে আনুষ্ঠানিক ভাবে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায় ১৭ আগস্টেই। এই সময় ধরে চাঁদে নামার উপযুক্ত জমি খুঁজেছে চন্দ্রযান ৩ লেজার আলোর সাহায্যে। বর্তমানে তার ঠিকানা চাঁদের দক্ষিণ মেরু। চাঁদ মামা এখন আর দূরে নয় আমাদের।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × two =