চাঁদের আরও কাছে চন্দ্রযান ৩, ইঞ্জিন-সেন্সর বন্ধ হলেও অবতরণ সম্ভব

চাঁদের আরও কাছে চন্দ্রযান ৩, ইঞ্জিন-সেন্সর বন্ধ হলেও অবতরণ সম্ভব

dc34bad044e7e603d6019b87215f0c67

নয়াদিল্লি: আরও কিছু অপেক্ষা। তারপরই কার্যত ইসরোর হাতে ধরা দেবে চাঁদ! পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে কিছু সপ্তাহে আগেই চাঁদের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল চন্দ্রযান ৩। কয়েকদিন আগে চাঁদের কক্ষপথেও ঢুকে পড়েছিল। এবার জানা গেল, আরও একটি কক্ষপথ পেরিয়ে গিয়েছে সেটি। চাঁদ থেকে চন্দ্রযান-৩-এর দূরত্ব এখন মাত্র ১ হাজার ৪৩৭ কিলোমিটার। এখনও পর্যন্ত যে সকল চ্যালেঞ্জ এসেছে, সেই সকল চ্যালেঞ্জ সফল ভাবে পার করেছে চন্দ্রযান ৩৷ এবার চাঁদের বুকে ভারতের সাফল্যের ধ্বজা ওড়ানোর পালা৷ 

চাঁদে পৌঁছনো চন্দ্রযান ৩-এর পক্ষে যে একদমই সহজ নয় তা আলাদা করে বলতে হয় না। ইসরোর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, চাঁদে পৌঁছতে মোট পাঁচ বার চন্দ্রযান-৩-এর কক্ষপথ পরিবর্তন হবে। তার মধ্যে ইতিমধ্যেই ২ বার সেই কক্ষপথ বদল হয়েছে। পাতি অঙ্কের হিসেবে আর তিনবার এই কক্ষপথ পরিবর্তন হলেই চাঁদের মাটিতে চন্দ্রযানের ল্যান্ডিং শুধু সময়ের অপেক্ষা হবে। চাঁদের কক্ষপথে সফল ভাবে চন্দ্রযান আগেও পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যায়ে চাঁদের মাটিতে নামতে গিয়ে বিপত্তি হয়। তাই এবারের চন্দ্রযান নিয়ে দেশবাসীর আশাও অনেক। তাই ইসরো নিজেরাও এই অভিযান নিয়ে প্রস্তুতি অনেকগুন বেশি করেছে। 

ইসরো জানিয়েছে, এবারে তারা এমনভাবেই চন্দ্রযান ৩ অভিযান চালনা করছে যাতে ইঞ্জিন এবং সেন্সর বন্ধ হলেও চাঁদের মাটিতে নামতে পারবে চন্দ্রযান-৩। ল্যান্ডার বিক্রমকে এমনভাবেই তৈরি করা হয়েছে। ইসরোর প্রধান এস সোমনাথ ‘চন্দ্রযান-৩: ভারত’স প্রাইড স্পেস মিশন’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত জানিয়েছেন, যদি সব কিছু ব্যর্থ হয়, কিছুই কাজ না করে তাহলেও বিক্রম চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করতে পারবে। কোনও সমস্যা হবে না। অর্থাৎ আগের অভিযানের কোনও ভুল তারা এবার করতে চান না। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামার কথা চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রমের। সব ঠিক থাকলে আগামী ২৩ আগস্ট বিকেল ৫টা ৪৭ মিনিটে ইতিহাস সৃষ্টি হয়ে যাওয়ার কথা। 

ইতিমধ্যেই ইসরোর তরফে টুইট করে জানানো হয়েছে, চাঁদের আরও কাছে পৌঁছে গিয়েছে চন্দ্রযান-৩। চন্দ্রযান-৩-এর পরবর্তী কক্ষপথ পরিবর্তন করানো হবে আগামী ১৪ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে। আর তিনটি কক্ষপথ পেরলেই সফল ভাবে চাঁদ হাতে পেয়ে যাবে ভারত। এই প্রেক্ষিতে ইসরো প্রধান জানিয়েছেন, মহাকাশযানটির যাতে জ্বালানি কম খরচ হয়, চাঁদের থেকে এর দূরত্ব সঠিক থাকে তা আগেই নিশ্চিত করা হয়েছে। আসলে ল্যান্ডার বিক্রমকে উল্লম্ব ভাবে অবতরণ করানোই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তাই খুবই সতর্কভাবে কাজ করা হচ্ছে এই অভিযানে। আপাতত এর মধ্যেও সাফল্য এসেছে। চাঁদকে খুব কাছ থেকে দেখে তার ছবি তুলে পাঠিয়েছে চন্দ্রযান ৩। ইসরো ৪৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা গিয়েছে চাঁদের রং সাদা বা হলদেটে নয়, বরং কিছুটা নীলাভ-সবুজ। চাঁদের গায়ে থাকা গর্তগুলিও স্পষ্ট ধরা পড়েছে। এখন এই অভিযান সফল হলে ভারতের মহাকাশ গবেষণা নিঃসন্দেহে নতুন মাত্রা পাবে।    

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *