উত্তরাখণ্ড: অভিশপ্ত ২০২০ পেরিয়ে মানুষ পা দিয়েছে একুশের নতুন বছরে। দীর্ঘকালীন অতিমারীর সংকটও কেটে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। কিন্তু বিপর্যয় পিছু ছাড়ছে না উত্তরাখণ্ডের। ২০১৩ সালে যে ভয়াবহ বন্যার সাক্ষী থেকেছিল ভগবান কেদারনাথের এই রাজ্য, এদিন আরো একবার তারই স্মৃতি যেন উস্কে দিল ধৌলিগঙ্গা নদীর জলোচ্ছ্বাস।
উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার এক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাছেই ধৌলিগঙ্গা নদী থেকে আচমকা দেখা দিয়েছে বিপুল জলোচ্ছ্বাস, এমনটাই জানা যাচ্ছে সূত্রের খবরে। এই জলোচ্ছ্বাসের কারণ এখনও পর্যন্ত সুনিশ্চিত করা যায় নি। তবে মেঘভাঙা বর্ষণ কিংবা বাঁধ ভাঙার ফলেই বিপত্তি ঘটেছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে নদীতীরবর্তী বহু ঘরবাড়ি এর ফলে ধ্বংস হয়ে গেছে। জানা গেছে, ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশের (ITBP) শতাধিক কর্মী ঘটনাস্থলে উদ্ধারকার্যে হাত লাগিয়েছে।
চামোলির জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের তরফ থেকে ধৌলিগঙ্গা নদীসংলগ্ন এলাকা খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুলিশ সুপারিটেনডেন্ট ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। এ ব্যাপারে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিভেন্দ্র সিং রাওয়াত জানিয়েছেন, “চামোলি জেলা থেকে একটা দুর্যোগের খবর পাওয়া গেছে। জেলা প্রশাসক, পুলিশ এবং দুর্যোগ মোকাবিলা কমিটির সদস্যদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।” রাজ্যবাসীর কাছে আতঙ্কিত না হওয়ার আবেদনও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, “গুজবে কান দেবেন না। সরকার সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।”
এর কিছুক্ষণ পর ঘটনা সম্পর্কে ফের জনগণকে অবগত করেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিভেন্দ্র সিং রাওয়াত। বলেন, “অলকানন্দার কাছ থেকে মানুষকে সরিয়ে আনা হচ্ছে। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে ভাগিরথী নদীর স্রোত বন্ধ করা হয়েছে। অলকানন্দার প্রবাহ বন্ধের জন্য শ্রীনগর বাঁধ এবং ঋষিকেশ বাঁধ খালি করা হয়েছে। রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলা তহবিলকেও সতর্ক করা হয়েছে।” এছাড়া তিনি নিজেও ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর জন্য রওনা হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী। চামোলি পুলিশ জানিয়েছে, ঋষিগঙ্গা বিদ্যুৎ প্রকল্প তপোবন এলাকায় হিমবাহের চ্যুতির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এলাকার মানুষকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার আদেশও দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের তরফে।