নয়াদিল্লি: গোটা দেশজুড়ে এনআরসি চালু হবে এমন গুঞ্জন বহুদিন ধরেই চলে আসছে। একাধিক বার বিভিন্ন ইস্যুতে এনআরসি নিয়ে মুখ খুলেছে কেন্দ্রীয় সরকারের শীর্ষ নেতারা। কিন্তু এখনো পর্যন্ত এনআরসি কবে চালু হতে চলেছে সেই ব্যাপারে স্পষ্ট বার্তা দেয়া হয়নি কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। সম্প্রতি জানানো হয়েছিল যে এখনই দেশজুড়ে এনআরসি চালু করার কোন পরিকল্পনা নেই কেন্দ্রের। ফের একবার সেই পুরনো অবস্থান বজায় রাখল কেন্দ্র। এদিন সংসদে জানিয়ে দেওয়া হল যে এখনো পর্যন্ত দেশজুড়ে এনআরসি চালু করার কোন পরিকল্পনা নেই কেন্দ্রীয় সরকারের।
লোকসভায় এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকার এই মুহূর্তে দেশজুড়ে এনআরসি চালু করার ব্যাপারে কিছুই ভাবছি না অর্থাৎ কবে দেশজুড়ে এনআরসি চালু হবে সেই সিদ্ধান্ত এখনো পর্যন্ত নেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে বহুদিন ধরেই দেশের রাজনৈতিক মহল উত্তপ্ত হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার দুটি আইন খুব তাড়াতাড়ি লাভ করবে বলেও একাধিকবার দাবি করেছিল। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেই ভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই দুটি আইনকে ঘিরে দেশজুড়ে ব্যাপক আন্দোলন তৈরি হয়েছিল এবং এখনও পর্যন্ত তার বিরোধিতা চলছে। তার মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এমন বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। কারণ এর আগে একাধিক নির্বাচনের আবহে কেন্দ্রীয় সরকার এই দুটি আইনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছিল। এমনকি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও গুরুত্ব পেয়েছিল সিএএ এবং এনআরসি ইস্যু। তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির জন্য তা লাগু করতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছিল কেন্দ্র। তবে এখন এনআরসি কবে লাগু হবে সেই তথ্যই কেন্দ্রের কাছেও হয়তো নেই।
আরও পড়ুন- প্রার্থী ঘোষণার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই প্রকাশ করতে হবে ক্রিমানাল রেকর্ড, সুপ্রিম নির্দেশ
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, কেন্দ্রীয় সরকার হয়তো এই নিয়ে ঘোষণা করতে একটু সঙ্কোচ করছে কারণ এর আগে এই দুটি ইস্যুকে নিয়ে যেভাবে গোটা দেশ উত্তাল হয়েছে তাতে চাপ বেড়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের। সেই প্রেক্ষিতেই হয়তো এই মুহূর্তে দুটি ইস্যু নিয়ে আর কোনো পদক্ষেপ নিতে চাইছে না তারা কারণ সামনেই রয়েছে আরো বেশ কয়েকটি বিধানসভা নির্বাচন এবং ২০২৪ লোকসভা নির্বাচন। তাই এখন আবার এই দুটি ইস্যু নিয়ে যদি দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয় তাহলে আসন্ন নির্বাচনগুলিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বিজেপির উপর। সেই জন্যই হয়তো এখন মেপে পা ফেলতে চাইছে গেরুয়া বাহিনীর শীর্ষ নেতারা।