নয়াদিল্লি: করোনার পর এবার মাঙ্কি পক্স নিয়েও দেশজুড়ে নতুন উদ্বেগ। আক্রান্তের হদিস তো আগেই মেলেছিল, কিন্তু সম্প্রতি আশঙ্কা করা হচ্ছে মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন কেরলের এক যুবক। যদিও এখনো পর্যন্ত তার নমুনার রিপোর্ট সামনে আসেনি, তবে সেক্ষেত্রে যদি মৃতের রিপোর্ট পজেটিভ আসে তাহলে এটাই হবে আমাদের দেশে প্রথম মাঙ্কি পক্স আক্রান্তের মৃত্যু। ফলে কেরল তো বটেই, মাঙ্কি পক্সের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই দেশজুড়ে ছড়িয়েছে আতঙ্ক। এমতাবস্থায় দেশের মাঙ্কি পক্স পরিস্থিতি আরও কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ এবং সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করল কেন্দ্র। জানা যাচ্ছে কেন্দ্রের তৈরি এই বিশেষ টাস্ক ফোর্স এই রোগের ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে সরকারকে একাধিক বিষয় নিয়ে পরামর্শ দেবে। পাশাপাশি এই বিশেষ টাস্ক ফোর্স আগামীতে মাঙ্কি পক্সের টিকাকরণ নিয়েও বিশেষ দায়িত্ব পালন করবে। সরকারি সূত্রে খবর, গত ২৬ জুলাই একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের মাধ্যমে এই টাস্ক ফোর্স তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেবিনের সচিব রাজীব গৌবা, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ, প্রধানমন্ত্রীর অফিসের অতিরিক্ত সচিব এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। ইতিমধ্যেই সরকারি তরফে জানানো হয়েছে, এই টাস্ক ফোর্সকে নেতৃত্ব দেবেন নীতি আয়োগ সদস্য ডাক্তার ভি কে পাল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিবসহ অন্যান্য উচ্চ পদস্থ স্বাস্থ্য আধিকারিকরা এই ট্রাস্ট ফোর্সের সদস্য থাকবেন।
উল্লেখ্য, রবিবার রাতেই প্রকাশ্যে এসেছে কেরলে শনিবার রাতে বিদেশ ফেরত এক যুবকের আকস্মিক মৃত্যু হয়েছে। ওই যুবক সপ্তাহখানেক আগেই সংযুক্ত আরব আমিরশাহী থেকে দেশে ফিরেছিলেন। তবে এক্ষেত্রে সবথেকে উদ্বেগজনক ঘটনাটি হল, গত মাসের প্রথম দিকে বিদেশে থাকাকালীন ওই যুবক মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং তাঁর রিপোর্ট পজেটিভ এসেছিল। গত ২৬ জুলাই থেকে ফের ওই যুবকের প্রচন্ড জ্বর আসে। শনিবার তাঁর অবস্থার অবনতি হয় এবং তাঁকে লাইফ সাপোর্টে দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। শনিবার রাতেই মারা যান বাইশ বছর বয়সী যুবক। সম্প্রতি এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই দেশের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রও। ইতিমধ্যেই আমাদের দেশে চারজন মাঙ্কি পক্সে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। তারপর থেকেই শুরু হয়েছে বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের উপর কড়া নজরদারি। এমতাবস্তায় কেরলের ওই যুবকের মৃত্যু আতঙ্ক অনেকটাই বাড়িয়েছে।
জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ন্যাশানাল এইডস কন্ট্রোল অরগানাইজেশন এবং ডিরেক্টর জেনারেল অফ হেলথ সার্ভিসেসকে দেশের মাঙ্কি পক্স পরিস্থিতির উপর পড়া নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইভাবে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ অথবা আইসিএমআরকে বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরিগুলি তৈরি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই আইসিএমআরের তরফে দেশের আরও ১৫টি ল্যাবরেটরীকে মাঙ্কি পক্স পরীক্ষার অনুমোদন দিয়েছে। পাশাপাশি মাঙ্কি পক্স নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রের নির্দেশে বিভিন্ন স্তরে প্রচারও চালানো হচ্ছে। এছাড়াও সরকারের তরফে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে একাধিক সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও খবর।