নয়াদিল্লি: করোনা অতিমারী যে দীর্ঘ বিপর্যয় ডেকে এনেছিল গোটা পৃথিবীর বুকে, তার হাত থেকে রেহাই পায় নি ভারতও। তবে অতিমারীর মোকাবিলায় প্রত্যাশার চেয়ে ভারতের সাফল্যের হার অনেকটাই বেশি। হাহাকারের দুনিয়ায় দু-দুটি ভ্যাকসিন বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে ভারত। দেশের অভ্যন্তরে শুরু হয়েছে টিকাকরণ প্রক্রিয়াও। এবার তারই পরবর্তী ধাপে পা রাখতে চলেছে ভারত সরকার।
আগামী মাস থেকেই পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে, এদিন এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সোমবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে করোনা টিকার বন্টনের দ্বিতীয় ধাপে পা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। সেই সঙ্গে তিনি জানান গত ৭ দিনে ভারতের করোনা সংক্রমণের হারও কমেছে অবিশ্বাস্য হারে। দেশ জুড়ে মোট ১৮৮টি জেলায় গত এক সপ্তাহে একটিও নতুন করোনা সংক্রমণের খবর পাওয়া যায়নি, জানিয়েছেন তিনি।
করোনা মোকাবিলায় দেশের সাফল্যের কথা বর্ণনা করে এদিন স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, “৫০ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকদের জন্য আমরা টিকাকরণের ব্যবস্থা করতে চলেছি আগামী মার্চ মাস থেকেই।” তবে ভ্যাকসিন নেওয়ার সাথে সাথে মানুষকে করোনা বিধি সম্পর্কেও সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন হর্ষ বর্ধন। তাঁর কথায়, “দেশের স্বাস্থ্যকর্মী তথা করোনা যোদ্ধাদের মধ্যে ৮০-৮৫% টিকাকরণ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া ২০ থেকে ২৫টি দেশে পাঠানো হয়েছে ভারতে তৈরি করোনা ভ্যাকসিন। আগামী মাস থেকেই আমরা টিকাকরণের পরবর্তী ধাপে পৌঁছে যেতে পারবো।”
বিশ্বের প্রতিটি মানুষে্য কাছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার এক আদর্শ মডেল হতে চলেছে ভারত, এদিন এমনটাই দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী। “আমাদের উন্নয়ন, প্রাচীন চিকিৎসাবিদ্যা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য পরিষেবা গোটা বিশ্বের কাছে নজির তৈরি করবে। আদর্শ এক মডেল হয়ে দাঁড়াবে এদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা।” উল্লেখ্য, গত ১৬ জানুয়ারি থেকে দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে করোনা ভাইরাসের টিকাকরণ প্রক্রিয়া। এক্ষেত্রে ভারতের বাজারে রয়েছে মূলত দুটি ভ্যাকসিন। ভারত বায়োটেক নির্মিত কোভ্যাকসিন এবং পুণের সিরাম ইনস্টিটিউট নির্মিত অক্সফোর্ডের টিকা কোভিশিল্ড। প্রথম পর্যায়ে দেশের চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মী, সাফাই কর্মচারী প্রমুখ প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের মধ্যেই বন্টিত হচ্ছে টিকা।