নয়াদিল্লি: ভারতীয় সেনা জওয়ান, বায়ু সেনা এবং নৌসেনাদের অবসরের বয়স বাড়ানোর পক্ষে আরও একবার সওয়াল করলেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত৷ খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি৷ এর ফলে তিন বাহিনীর ১৫ লক্ষ জওয়ান উপকৃত হবেন৷
বর্তমান অবসর গ্রহণের নিয়ম অনুযায়ী, একজন সেনা জওয়ান ১৫ বছরের বেশি চাকরি করতে পারেন না৷ রাওয়াত মনে করেন, জওয়ানরা কম বয়সে অবসর নেওয়ার ফলে বাহিনীতে কমবে প্রশিক্ষিত শক্তি৷ তবে অবসরের বয়স বাড়ানো হলে, স্বাভাবিক ভাবেই কমবে কর্মসংস্থান৷ জেনারেল বিপিন রাওয়াত বলেন, ‘‘একজন জওয়ান কেন মাত্র ১৫ বা ১৭ বছর চাকরি করবেন? কেন তিনি ৩০ বছর চাকরি করতে পারবেন না? এতে প্রশিক্ষিত শক্তি হারাতে হয় সেনাবাহিনীকে৷’’
সেনা জওয়ানের অবসরের বয়স বাড়ানো নিয়ে এই প্রথম নয়, এর আগেও সরব হয়েছেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত৷ সেনা জওয়ানদের অবসরের বয়স বাড়িয়ে ৫৮ বছর করার দাবি জানিয়েছেন তিনি৷ গত ফেব্রুয়ারি মাসে রাওয়াত বলেছিলেন, তিন বাহিনীতেই অবসরের বয়স বাড়ানোর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ তাঁর মতে, সেনাবাহিনীর পেনশন বৃদ্ধির বিষয়টি ‘অস্থিতিশীল’ হয়ে উঠেছে৷ বরং অবসরের বয়স বাড়িয়ে ৫৮ করা হোক৷ ৩৩ শতাংশ সেনা জওয়ানই ৫৮ বছর পর্যন্ত কাজ করতে সক্ষম৷
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি মনে করি ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক তৃতীয়াংশ জওয়ানই ৫৮ বছর পর্যন্ত কাজ করার ক্ষমতা রাখে৷ আজ একজন জওয়ানকে ৩৮ বছরেই বাড়ি পাঠানো হচ্ছে৷ তিনি কমপক্ষে ৭০ বছর বাঁচবেন৷ ১৭ বছরের চাকরির পর তাঁকে ৩০-৩২ বছর পেনসন দেওয়া হচ্ছে৷ তাঁকে কেন ৩৮ বছর চাকরি করতে দেওয়া হবে না? ৩৮ বছর চাকরির পর জওয়ানদের ২০ বছর পেনশন দেওয়া হোক৷ আমরা পুরনো ধারনাটাই বদলাতে চাইছি৷’’
চলতি অর্থবর্ষে ডিফেন্স সার্ভিসেস পেনশনের জন্য ১.৩৩ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে৷ ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে বরাদ্দ ছিল ১.১ লক্ষ কোটি৷ এর পরেই এই বিষয়ে সমীক্ষা শুরু করেন রাওয়াত৷ প্রতিটি হেড কোয়াটার্স থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন তিনি৷ ভারতে ১৪ লক্ষ সশস্ত্র সেনা জওয়ান রয়েছে৷ ২০১৯ সালের সেনাবাহিনীর স্যান্ডিং কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, সেনাবাহিনীতে ৪২,২৫৩ অফিসার এবং ১১.৯৪ লক্ষ জওয়ান আছে৷ নৌসেনাবাহিনীতে ১০ হাজার অফিসার এবং ৫৭,৩১০ কর্মী আছেন৷