তিরুবনন্তপুরম: শুক্রবার সন্ধ্যায় কেরলের কোঝিকোড় বিমানবন্দরে অবতরণের সময় রানওয়েতে পিছলে গিয়ে দু’টুকরো হয়ে যায় এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের বিমানটি৷ মৃত্যু হয় দুই পাইলট সহ ১৮ জনের৷ নিহত দুই বিমানচালক হলেন উইং কমান্ডার দীপক বসন্ত শাঠে এবং ক্যাপ্টেন অখিলেশ কুমার৷ প্রথম জীবনে ভারতীয় বায়ুসেনার ফাইটার জেট পাইলট ছিলেন দীপক বসন্ত শাঠে৷ অভিশপ্ত এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস ফ্লাইট ওড়ানোর আগে এয়ার ইন্ডিয়ার অন্যান্য বিমানও চালিয়েছেন তিনি৷ ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি (এনডিএ)-র প্রাক্তন ছাত্র শাঠের কাছে ছিল বোয়িং ৭৩৭ বিমান ওড়ানোর অভিজ্ঞতাও৷ ফলে তাঁর অভিজ্ঞতা বা দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে না৷ তা সত্ত্বেও ভাগ্যের ফেরে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হল এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসকে৷
অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল ভূষণ গোখলে জানান, ‘‘উইং কমান্ডার ক্যাপ্টেন দীপক বসন্ত শাঠে ছিলেন এনডিএ-র ৫৮ তম কোর্সের সদস্য৷ তিনি জুলিয়েট স্কোয়াড্রন থেকে এসেছিলেন৷’’ তিনি আরও জানান, ‘‘১৯৮১ সালের জুন মাসে হায়দরাবাদের এয়ার ফোর্স অ্যাকাডেমি থেকে শোর্ড অফ অনার নিয়ে পাশ করেন শাঠে৷ সেই সঙ্গে অসাধারণ স্কোয়াশ খেলোয়াড়ও ছিলেন তিনি৷’’ অত্যন্ত প্রফেশনাল ছিলেন দীপক বসন্ত শাঠে৷ ৫৮তম এনডিএ প্রেসিডেন্ট গোল্ড মেডেলে সম্মানিত হয়েছিলেন তিনি৷ জানা গিয়েছে, এয়ার ইন্ডিয়ার এয়ারবাস ৩১০ এস ওড়াতেন শাঠে৷ বাণিজ্যিক পাইলট হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বায়ুসেনার একজন দক্ষ ফাইটার পাইলট ছিলেন তিনি।
শুক্রবার এয়ারইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ককপিটে তাঁর সঙ্গে ছিলেন সহযোগী পাইলট ক্যাপ্টেন অখিলেশ কুমার। জানা গিয়েছে, গত বছরই বিয়ে হয়েছিল তাঁর। এরই মধ্যে ইতি পড়ল তাঁর জীবনে৷ করোনা অতিমারির মধ্যে বিদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের ফেরানোর ‘বন্দে ভারত’ অভিযানের অন্তর্ভুক্ত ছিল এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের আইএক্স১৩৪৪। শুক্রবার রাত ৭টা বেজে ৪১ মিনিট নাগাদ কোঝিকোড়ে বিমানবন্দরে পৌঁছয় বিমানটি৷ অবতরণের সময় কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছিল৷ যার জেরে রানওয়ে পরিবর্তনও করেন পাইলট৷ কিন্ত অবতরণের সময়েই পিছলে গিয়ে ৩৫ ফুট গভীর খাতে পড়ে যায় অভিশপ্ত বিমানটি৷ অকুস্থলেই মৃত্যু হয় দুই পাইলটের৷ যাত্রীদের একাংশ জানিয়েছেন, বিমানটি দুর্ঘটনাগ্রস্ত হলে পাইলটের দক্ষতায় ভয়ঙ্কর বিপদ এড়ানো গিয়েছে৷