নয়াদিল্লি: করোনা আতঙ্কের মধ্যেই আরও এক অশনি সংকেত দিল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)৷ তাদের দেওয়া তথ্য অনুসারে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ভারতে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাবে৷ প্রায় ১২ শতাংশ বেড়ে যাবে দেশে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা৷ ২০২০ সালে দেশে মোট ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ লক্ষ৷ এই প্রবণতা চলতে থাকলে ২০২৫ সালে সংখ্যাটা ১৫ লক্ষে পৌঁছবে৷
আরও পড়ুন- দড়ির মই দিয়ে উদ্ধার ৫০ ডুবন্ত বানর, প্রশংসিত কর্নাটকের বনদপ্তর
ক্যান্সার রিপোর্টের সাম্প্রতিক ট্রেন্ডের ডেটা বেস অনুসারে, ২০২০ সালে দেশে মোট ক্যান্সার রোগীর মধ্যে তামাক সেবন জনিত ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা ২৭.১ শতাংশ৷ এই সংখ্যা সবচেয়ে বেশি উত্তরপূর্বাঞ্চলে৷ পুরুষরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হন ফুসফুস, মুখ, পাকস্থলি এবং খাদ্যনালীর ক্যান্সারে৷ অন্যদিকে, মহিলাদের মধ্যে স্তন এবং জরায়ু ক্যান্সারের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়৷ মঙ্গলবার আইসিএমআর এবং ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিসিজ ইনফরমেটিক অ্যান্ড রিসার্চের তরফে ন্যাশনাল ক্যান্সার রেজিস্ট্রি প্রোগ্রাম রিপোর্ট, ২০২০ প্রকাশ করা হয়৷ এই রিপোর্টে ভারতে ক্যান্সারের প্রকোপ, মৃত্যুর হার, চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে৷
ন্যাশনাল ক্যান্সার রেজিস্ট্রি প্রোগ্রাম রিপোর্ট ২০২০ অনুসারে, ২০২০ সালে আমাদের দেশে ক্যান্সার আক্রান্ত পুরুষের সংখ্যা ৬ লক্ষ ৭৯ হাজার ৪২১৷ পাঁচ বছর পর ২০২৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৭ লক্ষ ৬৩ হাজার ৫৭৫৷ অন্যদিকে, মহিলাদের মধ্যে বর্তমানে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লক্ষ ১২ হাজার ৭৫৮৷ ২০২৫ সালে তা হতে পারে ৮ লক্ষ ৬ হাজার ২১৮৷
আরও পড়ুন- চাকরির পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন! CET প্রস্তাবে অনুমোদনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা
ভারতে স্তন ক্যান্সার আক্রান্ত প্রায় ২ লক্ষ (১৪.৮ শতাংশ) মহিলা৷ জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত ৭৫ হাজার (৫.৪ শতাংশ) মহিলা৷ অন্যদিকে গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টিনাল ট্র্যাকে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা মহিলা ও পুরুষ মিলিয়ে ২ লক্ষ ৭০ হাজার৷
ভারতে সার্জারি, কেমোথেরাপি ও রেডিয়েশন থেরাপির সাহায্যে ক্যান্সরের চিকিৎসা করা হয়৷ স্তন, মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সারে এই তিন ধরনের চিকিত্সা৷য় করা হয়ে থাকে৷ জরায়ুর ক্যান্সারে মূলত রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপির উপরই জোর দেওয়া হয়৷ ফুসফুস ও পাকস্থলির ক্যান্সারে সিস্টেমেটিক থেরাপিতে চিকিৎসা করা হয়৷
আরও পড়ুন- কেমন আছেন অসুস্থ প্রণব মুখোপাধ্যায়? হাসপাতাল বলছে ‘অবনতি’, পরিবার সূত্রে ‘উন্নতি’!
গত কয়েক বছরে ক্যান্সার চিকিৎসায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে৷ এখন পরীক্ষা পদ্ধতি অনেক উন্নত হয়েছে৷ যা থেকে সঠিক ফলাফল জানা সম্ভব হচ্ছে৷ দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স-এর প্রাক্তন রেডিয়েশন অঙ্কোলজিস্ট ড. পিকে জুলকা বলেন, ‘‘ফুসফুসে স্টেজ ফোর ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী পাঁচ বছর বেঁচে রয়েছেন, এটা আগে দেখা যেত না৷ কিন্তু এখন উন্নত চিকিৎসায় তা সম্ভব৷’’