বাতিল ২০০০ টাকার নোট! কোথায়, কীভাবে বদলাবেন বাতিল টাকা? নোট তৈরির আসল খরচ জানেন?

প্রায় ৭ বছরের মাথায় বাজার থেকে তুলে নেওয়া হল ২ হাজার টাকার নোট। ২০০০ টাকার নোট ছাপা বন্ধ করে দিতে চলেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। শুক্রবার আরবিআইয়ের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। তবে বাজারে যে ২০০০ টাকার নোট আছে তা আপাতত বৈধ থাকবে বলেই জানানো হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে বাতিল ২০০০ টাকার নোট কীভাবে বদলাবেন? তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে অনেকের মধ্যেই। যদিও এর নির্দিষ্ট নিয়মও জানিয়ে দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, একসঙ্গে ব্যাঙ্কে ২০,০০০টাকা পর্যন্ত ২০০০টাকার নোট জমা দেওয়া যাবে। গ্রাহকরা ব্যাঙ্কে ২০০০টাকার নোট জমা দিয়ে পরিবর্তে অন্য নোট নিতে পারবেন।
কীভাবে পুরনো নোট বদলাবেন ব্যাঙ্কে ?
নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাঙ্কে পুরনো নোট বদলাতে গেলে প্রথমে একটি নির্দিষ্টি ফর্ম্যাটে কিছু তথ্য দিতে হয়। এক্ষেত্রেও সেই তথ্য ব্যাঙ্ককে দিতে হবে। নিজের বৈধ পরিচয়পত্রের একটি ফটো কপি জমা করতে হবে। এক্ষেত্রে আধার কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ভোটার আই়ডি কার্ড, পাসপোর্ট, NREGA কার্ড , PAN কার্ড বা অন্য কোনও আইডি কার্ড যা সরকার ইস্যু করেছে, তা জমা করতে পারেন।
পরিচয়পত্র কী কারণে জমা করা হচ্ছে সেই কারণ লিখতে হবে। অর্থাৎ, পুরনো নোট পাল্টানোর জন্য জমা করলে তা উল্লেখ করতে হবে। সঙ্গে উল্লেখ করতে হবে তারিখ।
পুরনো নোট পরিবর্তন করতে গেলে যে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট আছে সেখানে যেতে হবে। যদি আপনি ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্যাশ টাকার পরিবর্তন করতে চান, তাহলে যে কোনও ব্যাঙ্কে পরিচয়পত্র নিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু, এই পরিমাণটা যদি বেশি হয়, তাহলে ব্যক্তিপিছু ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত পাবেন। বাকি টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়বে।
সশরীরে ব্যাঙ্কে যেতে না পারলে প্রতিনিধি পাঠিয়েও এই কাজ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে লিখিত এবং প্রয়োজনীয় তথ্য ব্যাঙ্ককে দিতে হবে।
তবে জানেন, যে গোলাপি রঙের নোট বদল নিয়ে আগামীদিনে এত ঝক্কি পোহাতে হবে সেই টাকা তৈরিতে খরচ কত?
২০১৬ সালে প্রথম ২০০০ টাকার নোট যখন ছাপানো হয়েছিল, তখন তা খুব ব্যয়বহুল ছিল।
২০১৭-১৮ সালে, ২০০০ টাকার নোট ছাপানোর জন্য সরকারের খরচ হত ৪ টাকা ১৮ পয়সা।
২০১৮-১৯ সালে সেই খরচ নেমে আসে ৩ টাকা ৫৩ পয়সায়।
২০১৯-২০, ২০২০-২১ এবং ২০২১-২২ সালে ২০০০ টাকার কোনও নোট ছাপায় নি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
অর্থাৎ, শেষবার ২০১৮-১৯ সালে ছাপা হয়েছিল ২০০০ টাকার নোট। সেই সময় প্রতি নোটে খরচ পড়েছিল ৪ টাকারও কম। ৫০০ টাকার নোট ছাপতে খরচ আরও কম। নোট পিছু খরচ পড়ে ২ টাকা ৯৪ পয়সা। তুলনায় ২০০ টাকার নোটে খরচ একটু বেশি। প্রতি ২০০ টাকার নোটে ২ টাকা ৯৩ পয়সা খরচ পড়ে।
কেন ছাপা হবে না ২০০০ টাকার নোট?
২০১৬ সালে সারা দেশে নোটবন্দির সময় পুরনো ৫০০, ১০০০ টকা বাতিল হয়ে বাজারে নতুন ৫০০ এবং প্রথম ২০০০ টাকার নোট আসে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার বার্ষিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, এরপর থেকে ২০০০ টকার নোটের চাহিদা ধারাবাহিকভাবে কমেছে। সেই কারণেই ২০০০ টাকার নোট ছাপা বন্ধ করতে চলেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া।