মোদীকে পাত্তা দিচ্ছেন না ট্রুডো, খালিস্তান ইস্যুতে ভারত বিরোধিতায় অনড়

মোদীকে পাত্তা দিচ্ছেন না ট্রুডো, খালিস্তান ইস্যুতে ভারত বিরোধিতায় অনড়

canada

নয়াদিল্লি: ভারত সদ্য আয়োজন করেছিল জি-২০ সম্মেলনের। দেশ-বিদেশের খ্যাতনামা, তাবড় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা সেই সামিতে এসেছিলেন। ভারতের সঙ্গে বাকি দেশগুলির সম্পর্কের ভিত আরও বেশি করে মজবুত হয়েছে এই সামিটের জন্য। কিন্তু নির্দিষ্টভাবে কানাডার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে চিড় যে এই সম্মেলনের পর থেকেই ধরবে তার আন্দাজ কেউ করেনি। বাস্তবে হল তাই। খালিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যা ইস্যুতে এখন কার্যত তরজা শুরু হয়েছে ভারত-কানাডার মধ্যে। ভারতের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ তোলা হয়েছে, যার পাল্টা দিয়েছে নয়াদিল্লি। 

ঘটনার সূত্রপাত কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর একটি বক্তব্য থেকে। তিনি দাবি করেন, খালিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যার পিছনে ভারতের মদত রয়েছে। এমনকি তিনি এও বলেন, ভারত নাকি চর কানাডায় ঢুকিয়ে তাকে হত্যা করেছে। এছাড়া গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কানাডার নিরাপত্তা সংস্থাগুলি সক্রিয়ভাবে কানাডার নাগরিক হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যার সঙ্গে ভারত সরকারের এজেন্টের সম্ভাব্য যোগের অভিযোগের তদন্ত করছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য স্বাভাবিকভাবেই আন্তর্জাতিক মহলে ঝড় তুলেছে। তবে ভারত এর বিরোধিতা করতে বেশি সময় নেয়নি। নয়াদিল্লির স্পষ্ট বক্তব্য, যে ধরনের অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা। কানাডায় কোনও হিংসায় ভারত সরকারের জড়িত থাকার বিষয়টি অযৌক্তিক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। 

তবে ভারত শুধুমাত্র বক্তব্য দিয়েই ক্ষান্ত থাকেনি। ইতিমধ্যেই কানাডার শীর্ষ কূটনীতিক অলিভিয়ার সিলভেস্টারকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলেও কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে। তবে ভারতের আগে এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে কানাডাও। তারাও জানিয়েছে, এক শীর্ষ ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি, এই দাবি করা হয়েছে, বিষয়টি সত্যি প্রমাণিত হলে তা সার্বভৌমত্ব এবং একে অপরের সঙ্গে আচরণের মৌলিক নিয়মের লঙ্ঘন বলে বিবেচিত হবে। কিন্তু বিষয়টি যে এখানেই থেমে থাকল তা নয়। কারণ জি-২০ সম্মেলনেই এক ‘ঝড়ের’ ইঙ্গিত মিলেছিল যার প্রভাব দুই দেশের মধ্যে আগামী দিনে বড় করে পড়বে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। 

আসলে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারত সফরে এসে খলিস্তান ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে কথা শুনতে হয়েছিল কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত নিজের আগের অবস্থানেই অনড় তিনি। মাঝে মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেও কোনও লাভ হয়নি, বরং বর্তমানে আরও বেশি ঝাঁঝাল আক্রমণ করতে শোনা যাচ্ছে তাঁকে। ভারতও যে বিষয়টিকে হালকাভাবে নিচ্ছে এমনটা নয়। কারণ বিগত কয়েক মাসে কানাডায় ভারত বিরোধী শক্তি বেশি করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। খলিস্তানি আন্দোলনের নামে মন্দিরে মন্দিরে হামলা হয়েছে। কানাডা সরকারকে এই নিয়ে বারবার সতর্ক করলেও কার্যত নীরবতা পালন করেছেন জাস্টিন ট্রুডো। বলতেই হয়, তিনিও তাঁর মতো করে রাজনীতিই করছেন।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four − two =