নাসিক: একটি অন্যরকম বিয়ের কাহিনি নিয়ে এখন আলোচনা চলছে। মহারাষ্ট্রের নাসিক শহরে অন্য সব বিয়ের মতোই এখানেই হয়েছে মালা বদল, সাত পাক ঘোরা সবই হলেও, এটি আর পাঁচটা বিয়ের থেকে অনেকটাই আলাদা। কারণ বিয়ের পাত্র ও পাত্রী। এখানে এক যুবক তাঁর এক বৃহন্নলার সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্কের পর, তাঁকেই বিয়ে করেছেন৷ এই বিয়ে নজিরবিহীন ভাবে সমাজের চোখে একটি উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷
নাসিকের ম্যানমেড এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় ঝালতে ১৫ জুন শিবলক্ষ্মী নামে এক বৃহন্নলাকে বিয়ে করেন৷ সমাজ এবং মানুষের তোয়াক্কা না করেই তিনি এক বৃহন্নলাকে স্ত্রীর স্বীকৃতি দেন সঞ্জয়৷ যদিও করোনা নামক অতিমারির জন্য প্রাচীন শিব মন্দিরেই বিয়ে সারতে হয়েছে তাঁদের৷ খুব বেশি লোকও তাঁদের বিয়েতে আমন্ত্রিত ছিলেন না৷ তবে যাঁরা এসেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই এই জুটিকে আশীর্বাদ দিয়েছেন৷ শুধু সঞ্জয়ই নন, শিবলক্ষ্মীকে আপন করে নিয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরাও। পরিবারের সদস্যরাও আনন্দের সঙ্গে সম্পূর্ণ খোলা মনে মেনে নিয়েছেন কিন্নর বউমাকে৷
সঞ্জয় বলেন, বৃহন্নলা হয়েও শিবলক্ষ্মীরা কিন্তু একজন মানুষ। ওঁদেরও মন আছে, ওঁরাও স্বপ্ন দেখে৷ নিজের মত করে জীবনে বাঁচার অধিকার আছে ওঁদেরও। তাহলে তাঁকে বিয়ে করতে সমস্যা কীসের? এর মাধ্যমে তিনি সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে একটি ইতিবাচক বার্তা দিতে চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন সঞ্জয়৷ সোশ্যাল মাধ্যম টিকটকে শিবলক্ষ্মীর সঙ্গে আলাপ হয় সঞ্জয়ের৷ কয়েক দিন পর আলাপ প্রণয়ে বদলে যায় এবং তাঁরা দু’জনেই বিয়ে করবেন বলে ঠিক করেন৷ তাঁর এই বাসনার কথা সঞ্জয় নিজের মাকে জানান৷ এরপর পরিবারের লোকজন মত দিতেই চার হাত এক হয়৷ শিবলক্ষ্মীর তরফে কয়েকজন বৃহন্নলাও তাঁদের বিয়েতে হাজির ছিলেন৷
শুধু পরিবারই নয়, সঞ্জয়-শিবলক্ষ্মীর বিয়েতে খুশি ওঁদের গোটা গ্রাম। প্রায় প্রতিদিনই বৃহন্নলা নতুন বউকে দেখতে বাড়িতে গ্রামের লোকজন আসছেন৷ এটাই এখন গ্রামে প্রধান আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে৷